নিউমার্কেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন অ্যাম্বুলেন্স মালিক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২০ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০২২
নিউমার্কেটে অ্যাম্বুলেন্সটি ভাঙচুর করা হয়

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টা। এসময় একজন আহত ২৫-৩০ বছর বয়সী রোগীকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাচ্ছিল একটি অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু নিউমার্কেট এলাকায় এলে এটি ভাঙচুরের শিকার হয়। অভিযোগ উঠেছে, ব্যবসায়ী ও দোকানদাররা ভাঙচুর করেছে এটি। এ ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সটির মালিক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।

অ্যাম্বুলেন্স মালিক সুজন জাগো নিউজকে বলেন, মাত্র তিন মাস আগে কিস্তিতে অ্যাম্বুলেন্সটি কিনেছি। একদম নতুন গাড়ি। আমার যে ক্ষতি হয়েছে তা বলে বোঝাতে পারবো না।

তিনি বলেন, আমি দুপুর সাড়ে ১২টায় অ্যাম্বুলেন্সচালকের ফোন পাই। তিনি বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্স শেষ। মার্কেটের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় এর ওপর রড দিয়ে হামলা করা হয়। বড় বড় ইটা মারছে, এখন রোগী পদ্মা জেনারেল হসপিটালের আইসিইউতে আছে।’

jagonews24

সুজন আরও বলেন, ফেসবুকে অ্যাম্বুলেন্সের ছবি দেখার পর আমি এখানে আসি। ব্যবসায়ীরা কেন এটা করবেন। ড্রাইভার আমাকে যখন জানায় আমি তাকে বলি দ্রুত রোগী হাসপাতালে নেন।

তিনি বলেন, আমার লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। রোগীর মাথায় ইটের আঘাত লেগেছে। তিনি হাসপাতালে।

ছাত্ররা অনেক সাহায্য করেছে জানিয়ে অ্যাম্বুলেন্স মালিক বলেন, নিউমার্কেট মালিক সমিতির বিরুদ্ধে আমি মামলা করবো, ক্ষতিপূরণ দাবি করবো। আমি অনুরোধ করছি, যেন ব্যবসায়ীদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনা হয়। ছাত্ররা অ্যাম্বুলেন্সটি বাঁচাতে চেষ্টা করেছে।

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে। তখন নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ শুরু হয়, যা চলে রাত আড়াইটা পর্যন্ত। মধ্যরাতে দুই পক্ষকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

jagonews24

তখন শিক্ষার্থীরা জানিয়েছিলেন, ঢাকা কলেজের মাস্টার্সের দুই শিক্ষার্থী রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে যান। কেনাকাটা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের কথাকাটাকাটি হয়।

একপর্যায়ে দুই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করা হয়- এমন খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে নিউমার্কেট এলাকায় যায় ঢাকা কলেজের একদল শিক্ষার্থী। পরে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।

পরদিন মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ব্যবসায়ীরা সড়কে চলে এলে দ্বিতীয় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ। সকাল সাড়ে ১০টার পর নীলক্ষেত মোড় থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত এলাকায় থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ।

সংঘর্ষের একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজের গেটে এবং ব্যবসায়ীরা চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।

এরপর ব্যবসায়ীরা নিউমার্কেট, গাউসিয়া মার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, চাঁদনী চক, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট এলাকায় জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে।

jagonews24

ব্যবসায়ীদের একটি অংশ সরাসরি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চলা সম্মুখ লড়াইয়ে অংশে নেয়। আরেকটি অংশ ইট ও পাথর সরবরাহ করে।

এদিকে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৪০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বেশ কয়েকজন। আবার অনেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।

এছাড়া দুপুরে ঢাকা কলেজের আবাসিক হল আগামী ৫ মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করে বিকেলের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এর কিছুক্ষণ পরই শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের এ ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেন। আবাসিক হল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। একইসঙ্গে অধ্যক্ষের অপসারণসহ ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনার বিচার দাবিতে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

এসএম/জেডএইচ/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।