ভুতুড়ে নিউমার্কেট এলাকা

জাগো নিউজ টিম জাগো নিউজ টিম
প্রকাশিত: ০৮:৪১ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০২২
নিউমার্কেট এলাকার সড়কবাতি বন্ধ করা হয়

রাজধানীর সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকার মধ্যে একটি নিউমার্কেট। এখানে প্রায় সব সময়ই হইচই, যানজট, মানুষের আনাগোনা লেগেই থাকে। আর ঈদের আগে নিউমার্কেটের অবস্থা কেমন হয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই নিউমার্কেট যেন এখন ভুতুড়ে এলাকা। রাস্তায় যতগুলো সড়কবাতি রয়েছে সেগুলো বন্ধ। দফায় দফায় সংঘর্ষের কারণে এ বাতি বন্ধ করা হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে শুরু হওয়া ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে। এরপর প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়। ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ জায়গায় অবস্থান করছেন।

jagonews24

পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের দাবি করলেও সরেজমিনে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা নিউমার্কেট এলাকায় ও শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের সামনে অবস্থান করছেন। এর মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছেন পুলিশ সদস্যরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, নীলক্ষেত থেকে সায়েন্সল্যাব মোড় পর্যন্ত রাস্তায় কোনো সড়কবাতি জ্বালানো নেই। পুরো এলাকায় ভুতুড়ে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আশপাশের এলাকায় সড়কবাতি থাকলেও সংঘর্ষস্থলে সড়কবাতি না থাকায় উভয়পক্ষের মধ্যে আতংক দেখা গেছে। সন্ধ্যার আগে কিছু যান চলাচল করলেও এখন যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। তবে খুব অল্প সংখ্যক রিকশা অন্ধকারের মধ্যে চলাচল করতে দেখা যায়। সেখানে বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে। তখন নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ শুরু হয়, যা চলে রাত আড়াইটা পর্যন্ত। মধ্যরাতে দুই পক্ষকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

jagonews24

তখন শিক্ষার্থীরা জানিয়েছিলেন, ঢাকা কলেজের মাস্টার্সের দুই শিক্ষার্থী রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে যান। কেনাকাটা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়।

একপর্যায়ে দুই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করা হয়- এমন খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে নিউমার্কেট এলাকায় যায় ঢাকা কলেজের একদল শিক্ষার্থী। পরে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।

পরদিন মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ব্যবসায়ীরা সড়কে চলে এলে দ্বিতীয় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ। সকাল সাড়ে ১০টার পর নীলক্ষেত মোড় থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত এলাকায় থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ।

সংঘর্ষের একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজের গেটে এবং ব্যবসায়ীরা চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।

এরপর ব্যবসায়ীরা নিউমার্কেট, গাউসিয়া মার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, চাঁদনী চক, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট এলাকায় জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে।

ব্যবসায়ীদের একটি অংশ সরাসরি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চলা সম্মুখ লড়াইয়ে অংশে নেয়। আরেকটি অংশ ইট ও পাথর সরবরাহ করে।

jagonews24

এদিকে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৪০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বেশ কয়েকজন। আবার অনেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।

এছাড়া দুপুরে ঢাকা কলেজের আবাসিক হল আগামী ৫ মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করে বিকেলের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এর কিছুক্ষণ পরই শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের এ ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেন। আবাসিক হল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। একইসঙ্গে অধ্যক্ষের অপসারণসহ ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনার বিচার দাবিতে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

টিটি/আল সাদী ভূঁইয়া/জেডএইচ/এএসএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।