চাপ নেই টিকিট বিক্রির, চাহিদা বেশি ২৮-২৯ এপ্রিলের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২৭ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০২২
বাস কাউন্টারগুলোতে তেমন চাপ নেই যাত্রীদের

গত দুই বছর করোনার কারণে অনেকেই গ্রামের বাড়ি ঈদ করতে পারেননি। এবছর করোনা সংক্রমণ কমে আসায় আসন্ন ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো মানুষের ভিড় থাকতে পারে বলে মনে করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। ফলে নানা রকম প্রস্তুতিও নিয়েছেন তারা। তবে এখনো প্রত্যাশা অনুযায়ী টিকিট বিক্রি শুরু না হলেও ২৮ ও ২৯ এপ্রিলের টিকিটের চাহিদা বেশি বলে জানান তারা।

সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর গাবতলী ও কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বগুড়া-নওগাঁ রোডের শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ১৭ বছর ধরে আছি, এমন পরিস্থিতি আর দেখিনি। শুক্রবার থেকে এখনো একটি অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়নি। আগে কল আসতে আসতে ফোন গরম হয়ে যেতো। কই গেলো সেসব যাত্রী। কাউন্টারে দাঁড়ানো যেতো না। তিনটা ল্যাপটপ দিয়ে কাজ চলতো। সকালে ছয়জন, বিকেলে আটজন কাজ করতাম। করোনা মহামারি কাটিয়ে এবারের ঈদে বাসের টিকিট যেখানে সংকট পড়ার কথা, সেখানে এখনো সেভাবে বিক্রিই হয়নি।

তবে শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের টিকিট বিক্রেতা আমিনুর রহমান বলেন, ২৫ তারিখের আগের কিছু টিকিট বিক্রি হয়েছে। কিন্তু যেমনটা আশা করেছি তেমনটা হয়নি। ঈদের এক সপ্তাহ আগে চাপটা বাড়তে পারে।

খুুলনা-যশোর-সাতক্ষীরাগামী সোহাগ পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা মো. মাইদুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, টিকিট বিক্রি আগের মতোই আছে। ঈদের যে চাপ থাকার কথা সেটা এখনো শুরু হয়নি। কয়েকদিন পর হয়তো বোঝা যাবে।

কাউন্টারগুলোতে দেখা যায় যাত্রীদের তেমন ভিড় নেই। শতাধিক কাউন্টারের কয়েকটিকে অল্প কিছু যাত্রী টিকিট কাটছেন। কেউ আবার অপেক্ষা করছেন বাসের জন্য। ঈদের আগে যেখানে কাউন্টারগুলোতে দাঁড়ানোর জায়গা থাকতো না সেখানে অধিকাংশ কাউন্টারই ফাঁকা। ৯ দিনের ছুটিতে ঘরমুখো মানুষের আগে থেকে ভিড় থাকার কথা থাকলেও তা দেখা যায়নি।

বগুড়া-নওগাঁসহ উত্তরবঙ্গের হানিফ এন্টারপ্রাইজের টিকিট বিক্রেতা আরাফাত আলী বাবু জাগো নিউজকে বলেন, রোজার আগে যত টিকিট বিক্রি হতো, রোজা শুরুর পর সেটা আরও কমে গেছে। এখন অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে কিছু। ৫০ ভাগ অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে এখন পর্যন্ত। এর প্রায় সব টিকিটই বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে। ২৮ ও ২৯ তারিখের টিকিটই বেশি বিক্রি হয়েছে।

jagonews24

অগ্রিম টিকিট বিক্রির চাহিদা সবচেয়ে বেশি কল্যাণপুরে। এখানকার অধিকাংশ কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট বেশি বিক্রি হয়ে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

শাহ ফাতেহ আলী পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা রবিউল আলম জাগো নিউজকে বলেন, ২৮ ও ২৯ তারিখের অগ্রিম টিকিট বিক্রির চাপটা বেশি। এই দুদিনের টিকিট প্রায় শেষ।

এনা পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা ইসমাইল বলেন, নিয়মিত টিকিট বিক্রির এখন চাপ কমই রয়েছে। ২৫ তারিখের আগ পর্যন্ত অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ৭০ ভাগ টিকিট বিক্রি হয়েছে। তবে এর পরের দিনগুলোর টিকিট এখনো ছাড়া হয়নি।

ঈদের আগে প্রতিবছরই বাস কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের ঢল নামে। দুর্ভোগ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। সে কারণে ঢাকায় কাজ না থাকায় অনেকে আবার আগেই গ্রামে যাচ্ছেন।

ক্লাস বন্ধ হওয়ায় ঈদের চাপ শুরুর আগেই বাড়ি যাচ্ছেন ঢাকা কলেজের এইচএসসি পড়ুয়া শিক্ষার্থী মো. সৈকত আহমেদ। কল্যাণপুরে হানিফ কাউন্টারে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। জাগো নিউজকে বলেন, কলেজে ক্লাস শেষ। এখন ঢাকায় তেমন কাজ নেই। ঈদে যেহেতু বাড়ি যেতে হবে তাই শেষদিকে ভিড়ের মধ্যে না গিয়ে আগেই চলে যাচ্ছি। ভাড়াও এখন আগের মতোই আছে। পরে হয়তো আরও বেশি লাগতে পারে।

এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে টিকিটের দাম বেশি বলে জানান কোনো কোনো যাত্রী। কাউন্টারে নিয়মিত টিকিটের দাম যেখানে ৫৫০ টাকা, সেখানে অগ্রিম টিকিটের দাম রাখা হচ্ছে ৫৯০ টাকা।

ঠাকুরগাঁওয়ে যাওয়ার জন্য টিকিট কেটে কাউন্টারে বসে থাকা জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, গতকাল ঢাকায় এসেছি। নিজের প্রয়োজনীয় একটি কাজ সেরে এখন বাড়ি চলে যাচ্ছি। ৬০০ টাকা করে ছিল টিকিট। কয়েক মাস আগে দাম বেড়েছে। ঈদে সেটা আরও বেড়ে ৮০০ টাকা হয়েছে।

রয়েল এক্সপ্রেসে ঝিনাইদহ যাওয়ার জন্য অগ্রিম টিকিট কাটতে আসা মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, পরিবার নিয়ে গ্রামে ঈদ করতে যাবো। ঈদের সময় টিকিট পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। তাই আগেই আসলাম অগ্রিম টিকিট কাটতে। কিন্তু ৫৫০ টাকার ভাড়া নিচ্ছে ৬৫০ টাকা।

আরএসএম/ইএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।