খাদ্য উৎপাদন-মজুত-বিপণনে অনিয়মে হবে সর্বোচ্চ ৫ বছরের জেল
খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণনে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রেখে একটি নতুন আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২২’ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, খসড়াটি খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে এসেছে। দুটো আইন একসঙ্গে করে নতুন আইনটি আনা হয়েছে। সামরিক শাসনমালের জারি করা অধ্যাদেশগুলোর বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ‘দ্য ফুড গ্রেইন সাপ্লাই প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাকটিভিটি অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৯’ এবং ‘ফুড স্পেশাল কোর্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ দুটো আইনকে একসঙ্গে করে নতুন আইন করা হচ্ছে। খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণনে ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ করা যায়, যাতে সিস্টেমের মধ্যে আনা যায়- সেজন্য আইনটি করা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এর মাধ্যমে বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে না, বাজারে মান যাতে নিশ্চিত থাকে। কেউ যাতে অনৈতিক কাজ করতে না পারে, ক্রেতারা যাতে ঠকে না যায়। খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রে কোনো অপরাধ যাতে না হয় সেগুলো প্রতিরোধ করা করার জন্য এই আইনটি আনা হয়েছে।
‘খসড়া আইনে কঠোর শাস্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। কেউ যদি এই আইনের অধীনে অপরাধ করে তবে তার সর্বোচ্চ ৫ বছর জেল বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। মন্ত্রিসভা বলে দিয়েছে, নিরাপদ খাদ্য আদালতই এগুলো দেখবে, আলাদা কোনো আদালত লাগবে না। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে মোবাইল কোর্টেও বিচার করতে পারবে, যে জুরিসডিকশন ওই পর্যন্ত শাস্তি দিতে পারবে।’
তিনি বলেন, আরেকটি সুন্দর জিনিস করা হয়েছে, কোনো খাদ্যদ্রব্য যদি জব্দ করা হয়, সেই খাদ্য যদি পঁচনশীল হয়, তবে সেই খাদ্যদ্রব্য নিলাম ডেকে বিক্রি করে শুধু স্যাম্পল হিসেবে অল্প একটু রাখা যাবে। খাদ্যপণ্য যদি পঁচনশীল নাও হয় তবেও ৪৫ দিনের মধ্যে নিলাম করে দিতে হবে, টাকাটা কোর্টের কাছে থাকবে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি যদি খালাস পান তবে টাকাটা তিনি পেয়ে যাবেন। আর দণ্ড পেলে আদালত যেভাবে আদেশ দেবে সেভাবে হবে।
আইনের অধীনে বিভিন্ন অপরাধ তুলে ধরে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে অতিরিক্ত ক্ষতিকর কিছু মিশিয়ে উপাদন করা, নির্দিষ্ট সময়ের বেশি মজুত করা, সরকারি কর্মসূচির নামাঙ্কিত বা বিতরণকৃত এমন চিহ্ন যুক্ত ছাড়া সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে খাদ্যশস্য ভর্তি বস্তা গ্রহণ, স্থানান্তর, মজুত করা, হাত বদল বা পুনরায় বিক্রি করাও অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
তিনি বলেন, সরকারি কোনো কর্মসূচির আওতায় নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম বিতরণ করা, সরকারি খাদ্য সামগ্রী বিক্রি বা বিতরণের জন্য বিএসটিআই নির্ধারিত বাটখানা বা মাপ ব্যবহার না করে হেরফের করলেও শস্তি পেতে হবে।
আরএমএম/ইএ/এএসএম