সড়কে ঝরেছে প্রায় ১১শ’ শিক্ষার্থীর প্রাণ
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে সড়ক দুর্ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু দিনদিন এই মাত্রা মহামারী আকার ধারণ করছে। এই দুর্ঘটনার কারণে অনেক পরিবারের স্বপ্নও মাটিচাপা পড়ছে। অকালে ঝরে যাচ্ছে হাজারো প্রাণ। অনেক বাবা-মা একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে পাগল প্রায় হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ান। অনেকে আবার সন্তান হারানোর তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে জীবন অতিবাহিত করেন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, গত এক বছরে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে এক হাজার ৮০ শিক্ষার্থী।
তার মধ্যে, গত জানুয়ারি মাসে ১০৩ জন ছাত্র-ছাত্রী সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়। ফেব্রুয়ারিতে ৯৭, মার্চে ১০২, এপ্রিলে ৭৭, মে মাসে ১০১, জুন মাসে ১১৩, জুলাই মাসে ১০৯,আগস্ট মাসে ১১১, সেপ্টেম্বর মাসে ৫৬,অক্টোবর মাসে ৭২, নভেম্বরে ৭০, ডিসেম্বরে ৬৯ জন শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মতে, পুলিশের কাছে সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ বা মামলা করেও ভিকটিম প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা পায় না। প্রশাসনের অবহেলার কারণে দিনদিন বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। আর বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি এই দুর্ঘটনার জন্য বেপরোয়া গাড়ি চালানো, ট্রাফিক আইনের যথাযত প্রয়োগের অভাব, অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ার সংস্কৃতি সর্বোপরি সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবকে দায়ী করছে।
এর আগে শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীতে মাত্র সাত ঘণ্টার ব্যবধানে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। প্রথমটি মৎস্য ভবন এলাকায় আর দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে শাহবাগে।
জানা গেছে, বিকেলে শাহবাগ মোড়ে ৭ নম্বর একটি বাসের ধাক্কায় খাদিজা সুলতানা মিতু নামে এক মেধাবী ছাত্রীর মৃত্যু হয়। খাদিজা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে (পিইসি) জিপিএ-৫ পেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। খাদিজার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের মানদুরায়। সে রাজধানীর শ্যামপুরে তার দুলাভাইয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছিলো।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর জানান, বিকেলে দুর্ঘটনার পর সদরঘাট-গাবতলীগামী ঘাতক বাস ও এর চালককে আটক করা হয়েছে।
অন্যদিকে, শনিবার সকালে মৎস্য ভবন এলাকায় বাসচাপায় নিহত হয় সাবিহা আক্তার নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। সে সেগুনবাগিচার রহিমা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী।
এএস/এসকেডি/পিআর