মধ্যরাতে রাব্বীকে প্রাণনাশের হুমকি


প্রকাশিত: ০৭:৩৭ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০১৬

পুলিশের নির্যাতনে আহত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বীকে মধ্যরাতে ছদ্মবেশে ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গোলাম রাব্বীর বন্ধু ও আত্মীয় স্বজন এমন অভিযোগ তুলেছেন।

গোলাম রাব্বীর বন্ধু জাহিদ জাগো নিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর দুই পূর্ব-পরিচিত ব্যক্তি পরিচিতের ভান করে হাসপাতালে সরাসরি রাব্বীর কেবিনে কাছে গিয়ে বসে। শারীরিক অবস্থা জানতে না চেয়ে জিজ্ঞেস করে- ‘ঘটনার সময় ক্ষুদে বার্তায় ‘কাদের কেস’ বলতে কী বোঝাতে চেয়েছিলেন। আপনি যে এত কথা বলতেছেন কেন? নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করছেন? নির্যাতিত হওয়ার পর যারা এভাবে বাড়াবাড়ি করেছিল তাদের পরিণতি কী হয়েছিল জানেন? এ ধরনের ঘটনায় শেষ পরিণতি মৃত্যু। মেরে ফেলে দেয়া হয়। শেষে উল্টো মামলার শিকার হয়। হাত, পা ফেলে দেয়।’

রাব্বীর উদ্ধৃতি দিয়ে জাহিদ আরো বলেন, ‘দুই ব্যক্তি প্রশ্ন করেন ‘আপনি কী মুসলমান? তাহলে দুই রাকায়াত নফল নামাজ পড়ে ঘুমান। আমরা আবার আসব।’

গত রাতে রাব্বীকে এভাবেই হুমকি দেয়া হয় মৃদু কণ্ঠে। একই কক্ষে কিছু দূরে বন্ধু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই ও খালাতো ভাই মিলে উপস্থিত ছিলেন ৬ জন।

রাব্বী তাদের চিনতে পারছে না জানালে অন্য সবাই তাদের পরিচয় জানতে চায়। সবাই প্রথম থেকে সন্দেহভাজন ওই দু’ব্যক্তির পরিচয় জানতে চায়। তখন তারা নিউজ টুয়েন্টি ফোরের সাংবাদিক পরিচয় দেয়। পরিচয় পত্র বা ভিজিটিং কার্ড দেখতে চাইলে তারা তা দেখাতে না পেরে বলে আমরা ফ্রি ল্যান্সার সাংবাদিক। রাব্বীর খালাতো ভাই রাশেদ তাদের ছবি তোলার চেষ্টা করলে মুখ ঢেকে দ্রুত কেবিন থেকে বেরিয়ে পড়ে যান ওই দুই ব্যক্তি।

রাব্বীর খালাতো ভাই রাশেদ জানান. আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব মিলে আমরা ৬ জন কেবিনে ছিলাম। তাদের মতিগতি প্রথম থেকেই সন্দেহজনক ছিল। রাব্বীও তাদের চিনতে না পারায় আরো বেশি সন্দেহ হয়।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলটিতে ফোন করে জানা যায় তাদের এমন কেউ নেই। তখন ছবি তুলতে গেলে দ্রুত সটকে পড়েন। এরপর রাব্বী জানায় তাকে হুমকি দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মোজাম্মেল হক জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনার বিষয়টি তিনি অভিযোগ আকারে পরে শুনতে পেরেছেন। ঘটনার সময়ই জানানো হলে তাদের ধরা সহজ হতো। তবে এখন নিরাপত্তা ও নজরদারি দুটোই বাড়ানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. আবুল কাসেম বলেন, গভর্নর আতিউর রহমান আমাকে পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক তার পাশে থাকবে। চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। দেখা যাক কী হয়।

উল্লেখ্য, গত ৯ই জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বিহারী ক্যাম্প এলাকা থেকে শুরু করে আসাদগেইট পর্যন্ত মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ উপ-পদির্শক (এসআই) মাসুদ রানাসহ তিন পুলিশ সদস্য গোলাম রাব্বীকে বেধড়ক মারধর, হয়রানি ও ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের চেষ্টা করে।

ভুক্তভোগী রাব্বী ‘জাগো নিউজ’ এর চাকরির পাতায়ও নিয়মিত লেখালেখি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ ছাত্র সময় টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপক হিসেবেও কাজ করেছেন। ঘটনার পর মাসুদ শিকদারকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এছাড়া ঘটনার তদন্তে পুলিশ সদর দফতর ও তেজগাঁও বিভাগ পুলিশ আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করে।

জেইউ/জেডএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।