ব্যাংকার পেটানোর ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে তদন্ত কমিটি


প্রকাশিত: ০৫:০১ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০১৬
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক গোলাম রাব্বি

চাঁদার দাবিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক গোলাম রাব্বিকে মারধরের অভিযোগের ঘটনায় তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছেন। খুব শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

শুধু তাই নয়, তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চূড়ান্তভাবে তদন্তে অভিযুক্ত মোহাম্মদপুর থানার ওই পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানা দোষী সাব্যস্ত হলে অবশ্যই শাস্তিযোগ্য বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে গত ৯ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বিহারী ক্যাম্প এলাকা থেকে শুরু করে আসাদগেইট পর্যন্ত এসআই মাসুদ রানাসহ তিন পুলিশ সদস্য গোলাম রাব্বিকে বেধরক মারধর ও হয়রানি করে।

ভুক্তভোগী রাব্বি জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজের চাকরির পাতাতে নিয়মিত লেখালেখি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ ছাত্র সময় টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপক হিসেবেও কাজ করেছেন।

হয়রানির ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকারের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার হাফিজ আল ফারুককে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের তদন্ত কাজ চলছে। তদন্তে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। তবে তা তদন্তের স্বার্থে আগেই বলা ঠিক হবে না। কবে নাগাদ রিপোর্ট প্রকাশিত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনাটি আমরা অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করছি। খুব শিগগিরই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

তেজগাঁও বিভাগের এডিসি আনিছুর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, একটা ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি ছোট না বড় তার চেয়ে বড় বিষয় একজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ। গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তদন্ত চলছে। তদন্তের আগে আর কিছু বলা ঠিক হবে না। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত এসআই মাসুদ ক্লোজড। তিনি কোনো কাজে অংশ নিতে পারবেন না।

উল্লেখ্য, ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে গোলাম রাব্বি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগে ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত রাব্বি কিছুতেই দু`চোখের পাতা এক করতে পারছেন না। চিকিৎসকের পরামর্শে ঘুমের ওষুধ খাইয়েও ঘুম পাড়ানো যাচ্ছে না তাকে।

হঠাৎ করে উচ্চরক্ত চাপও বেড়ে গেছে। এলোপাতারি কিল, ঘুষিতে ঘাড়ে ও লোহার রডের আঘাতে পায়ের ব্যাথাতে বারবার কুঁকড়ে উঠছেন। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীরা সব সময় পাশে থেকে সান্ত্বনা দিলেও ভয়ঙ্কর সেই রাতের পুলিশের দানবরূপী আচরণ ও নির্যাতনের ঘটনা কিছুতেই মন থেকে মুছে ফেলতে পারছে না রাব্বি।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক মনোচিকিৎসক ডা. হেলালউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, তাদের ভাষায়, একিউট স্ট্রেস ডিজঅর্ডার (তীব্র মানসিক চাপ) জনিত সমস্যার কারণে এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে।

তীব্র মানসিক চাপের কারণে এ ধরনের রোগীদের স্বাভাবিক ঘুম নষ্ট হয়। চোখের সামনে পুরোনো ঘটনা বারবার ভেসে ওঠে। মোবাইলের শব্দে কেউ কেউ ভয় পেয়ে যান। তিনি রাব্বিকে একজন মানসিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানোর পরামর্শ দেন।

জেইউ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।