ফরিদপুর মেডিকেলে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি : রোগীদের ভোগান্তি
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীর চিকিৎসায় অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগে দুই ইর্ন্টানি (শিক্ষানবিশ) ডাক্তারকে লাঞ্ছিত করেন তার স্বজনরা। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এই ঘটনার পর থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি চলছে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
ইর্ন্টানি ডাক্তারদের উপর হামলার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষানবিশ ডাক্তাররা। এ কারণে এক প্রকার অচল হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে জরুরি বিভাগে তালা দিয়ে রাখায় ডাক্তারাও ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না এবং রোগীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
৫শ` শয্যা হাসপাতালটিতে ভর্তি হওয়া শত শত রোগী ও মঙ্গলবার বিকেল থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরাও চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না।
দফায় দফায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিলেও অচলাবস্থা এখনো নিরসন হয়নি। সর্বশেষ দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ডাক্তারদের কর্মবিরতি চলছে বলে জানা যায়।
এদিকে, ইন্টার্নি ডাক্তারদের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি ও মামলার প্রস্তুতিতে সকাল থেকেই দলে দলে শিক্ষানবিশ ডাক্তাররা কোতয়ালী থানায় এসে ভিড় করেন।
এছাড়া কৃত্য পেশা ভিত্তিক মন্ত্রণালয় গঠন, সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল পুনর্বহাল, বেতন বিলে ইউএনওর স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত বাতিল, আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ বিভিন্ন পদোন্নতির ব্যবস্থার দাবিতে চলে প্রতিদিনের দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি। এ সকল কর্মবিরতি ও চিকিৎসা বিরতিতে সেবা জটে পড়ে এক প্রকার অসহায় হয়ে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। প্রকৃচি, বিসিএস সমন্বয় কমিটি, ননক্যাডার ও ফাংশনাল ইউনিটি ফরিদপুর শাখার পক্ষ থেকেও গত ১১ জানুয়ারি থেকে প্রতিদিন দুপুর ১১টা থেকে একটা পর্যন্ত চলছে কর্ম বিরতি।
শামিম নামের এক রোগীর স্বজন জানান, আমরা চিকিৎসা নিতে এসে দেখি হাসপাতালের বাইরেই সকলে দাঁড়িয়ে ভিড় করছেন। কেউ কোনো চিকিৎসা নিতে পারছেন না। এই অবস্থা দেখে আমরাও ফিরে চলে যাই। মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরা এই অচলাবস্থার দ্রুত সমাধানের দাবি করেন।
উলেখ্য, মঙ্গলবার বিকেলে শহরের ধুলদী নামক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে আসা চার রোগীর স্বজনদের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন হাসপাতালের নারীসহ দুই শিক্ষানবিশ চিকিৎসক ও একজন সেবিকা। ওই ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের এই কর্মবিরতি চলছে।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আরিফ ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, মঙ্গলবার বিকেলে ফরিদপুর সদরের ধুলদী এলাকায় একটি মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় পড়লে ওই মাইক্রোবাসের চারজন আহত হন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনা হয়। তাদের পুরুষ সার্জারি বিভাগে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করা হয়। এসময় ওই রোগীদের মধ্যে একজন রোগীর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হয়ে গেলে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে স্বজনরা হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও সেবিকাদের উপর হামলা করেন।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. গনপতি বিশ্বাস শুভ জাগাে নিউজকে জানান, আমরা জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছি। দ্রুত কর্ম বিরতি প্রত্যাহার হয়ে যাবে ও বিষয়টির সমাধান হয়ে যাবে।
এস.এম. তরুন/এমজেড/এমএস