রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের আগুন, বসতি ও সেন্টার ভস্মীভূত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০১:১৩ এএম, ১২ মার্চ ২০২২

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবারও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এপিবিএন ও রোহিঙ্গাদের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও বেসরকারি সংস্থা ‘মুক্তি কক্সবাজার’র একটি লার্নিং সেন্টার ও একাধিক রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে গেছে।

শুক্রবার (১১ মার্চ) বিকেলে কুতুপালং ক্যাম্প-৪-এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। 

তিনদিন আগেই বালুখালী ক্যাম্প-৫-এর ৫৫৩টি রোহিঙ্গা বসতি আগুনে পুড়ে যায়। এর মধ্যে ৪৬০টি বসতি সম্পূর্ণ এবং বাকিগুলো আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত শরণার্থীরা জানান, দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়ে যেতো।

ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা জাগো নিউজকে জানান, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ক্যাম্প-৪-এর এফ ব্লকের একটি রোহিঙ্গা বসতির রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত। এরপর আগুন আশপাশের বসতিতে ছড়িয়ে পড়ে। এপিবিএনসহ রোহিঙ্গারা দ্রুত পানি ঢেলে বিকেলে সাড়ে পাঁচটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

অগ্নিকাণ্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছুদ্দৌজা জাগো নিউজকে বলেন, আগুনে সাতটি রোহিঙ্গা বসতি ও বেসরকারি সংস্থার একটি লার্নিং সেন্টার পুড়ে গেছে। আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করায় ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে। আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

jagonews24

এপিবিএন পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার বিকেলে প্রায় দুই ঘণ্টার আগুনে বালুখালী ক্যাম্প-৫-এর ৫৫৩টি রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে যায়। এর মধ্যে ৪৬০টি বসতি সম্পূর্ণ এবং বাকিগুলো আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গৃহহীন হয়ে পড়েন অন্তত তিন হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী। এর বাইরে আরও তিনটি মক্তব, তিনটি মসজিদ, ছয়টি এনজিও স্কুল ও একটি ফিল্ড হাসপাতাল পুড়ে গেছে। আগুনে মো. আয়াছ (৩) নামের এক রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আশ্রয়শিবিরের বি ব্লকের মোছরাবাজার এলাকার পাহাড়ের ঢালুর একটি রোহিঙ্গা বাড়ির রান্নাঘরের গ্যাসের চুল্লি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল।

রোহিঙ্গা মাঝিরা বলেন, চলতি বছরের গত দুই মাসে আশ্রয়শিবিরগুলোতে সাত দফা অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, যা আগে কখনো ঘটেনি। হঠাৎ করে আগুন লাগার পেছনে অন্য কোনো কারণ বা নাশকতার বিষয় আছে কি না, অনুসন্ধান জরুরি।

রাজাপালং ইউনিয়নের কুতুপালং এলাকার মেম্বার প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, অধিকাংশ রোহিঙ্গা বসতি বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে বানানো এবং একটির সঙ্গে আরেকটি লাগানো। একটি শেডে ৪০ থেকে ৫০টি পরিবার থাকে। কোনো একটি ঘরে আগুন লাগলে অন্য ঘরগুলো রক্ষার উপায় নেই। এছাড়া শিবিরগুলোতে ফায়ার সার্ভিস বাহিনীর কোনো স্টেশন নেই। ২০ থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে উখিয়া ও টেকনাফ সদর থেকে ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা পৌঁছানোর আগেই সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

সায়ীদ আলমগীর/এমকেআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।