দুর্গম এলাকায় হচ্ছে আবাসিক স্কুল
পার্বত্য এলাকাসহ সকল দুর্গম এলাকায় আবাসিক প্রাথমিক স্কুল করা হবে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারাগাঁওয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিকার আইন প্রণয়নের জন্য বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন ও পার্লামেন্ট ককেশাশ অব সিলড্রের রাইটস যৌথভাবে আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, যেসব দুর্গম এলাকায় চার-পাঁচ মাইলের মধ্যে স্কুল নেই সেখানে আবাসিক প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। সমতলের চেয়ে ওই সব এলাকা একটু ভিন্ন তাই সেখানে আমরা আবাসিক স্কুল নির্মাণ করবো।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী বলেন, আগে প্রাইমারির শিক্ষকরা বুরট্রের্নি পাস করে আমাদের পড়িয়েছেন। তারা পড়াতে পারলে আজ আমরা কেন গুণগত শিক্ষা দিতে পারছি সে সম্পর্কে প্রশ্ন উঠছে। ৯৭ শতাংশ শিশু যে স্কুলে ভর্তি হচ্ছে তা শিক্ষকদের হোম ভিজিট এবং শিক্ষা কর্মকর্তাদের পরিশ্রমের কারণে হয়েছে বলে জানান তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রতিদিন একজন শিক্ষক যদি শিক্ষার্থীদের তিনটি করে ইংরেজি শব্দ শেখান তাহলে দেড়শত দিন ক্লাস হলে বছরে ৪৫০ নতুন শব্দ শেখবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের মটিভেশন থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা সঠিক শিক্ষা পাচ্ছি না বলে ভিন্ন একটা চেতনা জেগে উঠছে। এটা পুলিশ, আর্মির কারণে হয়েছে তা কিন্তু না। আজ থেকে ত্রিশ বছর আগে কি এ ধরণের আলোচনা হয়েছে প্রশ্ন রাখেন তিনি।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আজ পর্যন্ত গুণগত শিক্ষা নিয়ে কি কোন টকশো হয়েছে? এটা নিয়ে জাতীয় ভাবে আলোচনা হয়নি। এর জন্য আমি কাউকে দায়ী করতে চাই না। এটা টিম ওয়ার্কের মতো। দেশটাকে এগিয়ে নিতে আজকে আমরা যে ভাবনাটা ভাবছি সেটা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।
শিক্ষায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, একজন শিক্ষক আগে ২৫ টাকা ৩০ টাকা বেতন পেতেন এখন ১৮ হাজার টাকা পান। তারপরেও কেন গুণগত শিক্ষায় মনোযোগ নেই কেন। তাহলে বুঝতে হবে তার বই প্রেমের অভাব আছে। অর্থাৎ কাজের সঙ্গে যদি ভালোবাসা না থাকে তাহলে তা কোনো কাজে আসে না।
শিক্ষার্থীদের ড্রপ আউট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফেক ইনরোলমেন্টের প্রভাব রয়েছে। আমরা বলছি দুই কোটি বাচ্ছা আছে। দুকোটির জন্য বইও ছাপানো হচ্ছে। আসলেই কি দুই কোটি বাচ্ছা আছে? প্রত্যেকটা স্কুলে রেনডম সেম্পলিং করে শিক্ষকরা তথ্য প্রেরণ করেন।
গণশিক্ষা মন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, গ্রামের অধিকাংশ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকরা ৭৫ শতাংশ উপবৃত্তি পায় সেরকম করে অতিরিক্ত ভর্তি দেখায়। এটা না করলে ওনাদের নাকি কর্তৃত্ব থাকে না। জবাবদিহিতার মুখে পড়েন। এটা বাস্তব ঘটনা। এ ধরনের ঘটনা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমরা ক্ষমতা গ্রহণের সময় ৪০ লাখ শিশুকে উপবৃত্তি দেয়া হতো। বর্তমানে ৭৮ লাখের বেশি শিশুকে দিচ্ছি। আমরা সকল শিশুকে উপবৃত্তি দেয়ার প্রকল্প গ্রহণ করেছি।
এনামুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণ-স্বাক্ষরতা অভিযানে নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী,সেভ দ্যা চিলড্রেন এর ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর টীম হোয়াইট, রাজিয়া কাজল, আবুল কালাম আজাদ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক আবু হেনা মস্তফা কামাল, সেভ দ্যা চিলড্রেনের শিক্ষা বিভাগের পরিচালক তালাৎ মাহমুদ প্রমুখ।
এনএম/এসকেডি/আরআইপি