ব্যাংকার পেটানোর ঘটনায় বিব্রত পুলিশ : তদন্ত হচ্ছে


প্রকাশিত: ০৬:০৯ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৬

চাঁদার দাবিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার গোলাম রাব্বীকে বেধরক মারধরের অভিযোগের ঘটনায় বিব্রত সংশ্লিষ্ট বিভাগের পুলিশ সদস্যরা। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তও হচ্ছে। এজন্য মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার হাফিজ আল ফারুকের নেতৃত্বে তদন্ত টিম কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

অভিযুক্ত মোহাম্মদপুর থানার ওই পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানার বিরুদ্ধে করা এ অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তিযোগ্য বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বিহারী ক্যাম্প এলাকা থেকে শুরু করে আসাদগেট পর্যন্ত এসআই মাসুদ রানাসহ তিন পুলিশ সদস্য গোলাম রাব্বীকে বেধরক মারধর ও হয়রানি করেন।

রাব্বী বাংলাদেশ ব্যাংকের পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত। জাগো নিউজের চাকরির পাতায়ও নিয়মিতও লেখেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ ছাত্র সময় টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপক হিসেবেও কাজ করেছেন।

হয়রানির ঘটনায় গোলাম রাব্বী তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার বরাবর অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার হাফিজ আল ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, বিব্রত তো বটেই। আমাদের কোনো সদস্যকে নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলুক তা আমরা চাই না। তবে বিব্রত হওয়ার চাইতে আমরা ঘটনাটির নিরপেক্ষ তদন্তকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।

“আমাকে দায়িত্ব দিয়ে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। ওই পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অভিযোগকারীর সঙ্গেও কথা বলা হবে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিললে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। অবশ্যই বিভাগীয় শাস্তিযোগ্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

তেজগাঁও বিভাগের এডিসি আনিছুর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, একটা ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি ছোট না বড় তার চেয়ে বড় বিষয় একজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ। গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তদন্ত হচ্ছে। তদন্তের আগে আর কিছু বলা ঠিক হবে না।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর বলেন, ঘটনার পর থেকে অসংখ্য ফোন আসছে। টিভিতে খবর হচ্ছে। আমরা চাচ্ছি বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক। তদন্ত হচ্ছে। তদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

থানার একাধিক পুলিশ সদস্য নাম প্রকাশ না করে অভিযোগ করে বলেন, এক মাসুদের কারণে সব পুলিশ সদস্যকে দুর্নামের ভাগীদার হতে হবে। এটা আমরা চাই না। মাসুদ দোষী হলে ব্যবস্থা যেন নেয়া হয়।

তবে রাতে কথা হলে অভিযুক্ত এসআই মাসুদ রানা দম্ভোক্তি প্রকাশ করে বলেছিলেন, আমি নির্দোষ, আমার কিচ্ছু হবে না। নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। আমিই নির্দোষ প্রমাণিত হবো। আর থানার সবাই আমার পক্ষে। আর আমি শুধু একা ছিলাম না আমার সঙ্গে শাহজাহান ও লতিফ নামে আরও দুই কনস্টেবল ছিল।

উল্লেখ্য, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে মোহাম্মদপুরের বিহারী ক্যাম্প হয়ে বাসার দিকে যাওয়ার সময় বিহারী ক্যাম্পের সামনে পুলিশি বাধা মুখে পড়েন রাব্বী। নেশাজাতীয় দ্রব্য কাছে আছে বলে কোনো কিছু না বলেই তল্লাশির চেষ্টা চালায় পুলিশ। কোথায় আছে, ইয়াবা, নেশাজাতীয় দ্রব্য বা অস্ত্র-সরঞ্জাম জাতীয় কিছু..।

এরপর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শুরু হয় লাঠি-রাইফেলের মাথা দিয়ে গুতানো, এক এক করে পোশাক খোলা আর আজেবাজে বকাবকি।

গোলাম রাব্বীর অভিযোগ, “বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসারের পরিচয় দিয়েও রেহাই মেলেনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, বিসিএস ক্যাডার, পুলিশেরই এসপি পরিচয় দেয়া ভাই থেকে শুরু করে সবারই পরিচয়ও দিয়েছি। শেষমেষ ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতির নামও বলেছি। কিন্তু তা গ্রহণযোগ্য মনে করেনি। মারধর করেছে। টাকা চেয়েছে। মূলত টাকা দিতে না পারার কারণেই বেশি করে মারধর করেছে। পরে রেডিও ধ্বনির সাংবাদিক জাহিদ হাসানসহ তিন-চারজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।



জেইউ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।