ব্যাংকার পেটানো মাসুদের দম্ভোক্তি ‘আমার কিচ্ছু হবে না’


প্রকাশিত: ০৪:০৮ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৬

চাঁদার দাবিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার গোলাম রাব্বীকে বেধড়ক পেটানো মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ উপ-পদির্শক (এসআই) মাসুদ রানা দম্ভোক্তি প্রকাশ করে বলেছেন, অভিযোগ দিয়ে লাভ নেই, আমার কিচ্ছু হবে না, থানার সব পুলিশ কর্মকর্তা আমার পক্ষে।

রোববার রাতে অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়ে জানতে চাইলে এমন দম্ভোক্তি প্রকাশ করেন তিনি।
 
এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বিহারী ক্যাম্প এলাকা থেকে শুরু করে আসাদগেট পর্যন্ত তিনি হয়রানি করেন গোলাম রাব্বীকে।
 
রাব্বী বাংলাদেশ ব্যাংকের পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত। জাগো নিউজের চাকরির পাতায়ও নিয়মিতও লেখেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ ছাত্র এক সময় সময় টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপক হিসেবেও কাজ করেছেন।
 
হয়রানির ঘটনায় গোলাম রাব্বী তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার বরাবর অভিযোগ করেছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর।
 
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই শাস্তিযোগ্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওই অভিযুক্ত এসআইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
 
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ উপ-পদির্শক (এসআই) মাসুদ রানা বলেন, তাকে শুধু চার্জ করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল কিছু আছে কিনা, তল্লাশি চালাতে চাইলেই তিনি ক্ষেপে যান। একসময় লোকজন জড়ো হলে তাকে থানায় নেয়ার জন্য গাড়িতে উঠানো হয়। পরে সাবেক সাংবাদিক ও ব্যাংক কর্মকর্তার পরিচয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
 
তিনি বলেন, আমি নির্দোষ, আমার কিচ্ছু হবে না। নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। আমিই নির্দোষ প্রমাণিত হবো। থানার সবাই আমার পক্ষে। আর আমি শুধু একা ছিলাম না আমার সঙ্গে শাহজাহান ও লতিফ নামে আরও দুই কনস্টেবল ছিল।
 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসআই মাসুদের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায়। এক বছর আগে তিনি মোহাম্মদপুর থানায় যোগদান করেন। কনস্টেবল হিসেবে পুলিশে যোগদান করা মাসুদ ডিপার্টমেন্টালি প্রমোশন পেয়ে এসআই হন। ধানমন্ডি ও কলাবাগান থানাতেও তিনি এসআই হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
 
ধানমন্ডি থানার একটি সূত্র জানায়, আলম নামে এক সিএনজিচালককে আটক রেখে তিনি মোটা অংকের চাঁদা আদায় করেন। সে সময় বেশ হইচই হয়। এরপর একটি ডেভেলপার কোম্পানির কাছে চাঁদা দাবির প্রেক্ষিতে তখন ডিসি বরাবর অভিযোগ হয়েছিল তার বিরুদ্ধে। তবে কথা বলার সময় এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
 
এ ব্যাপারে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার জাগো নিউজকে বলেন, আমি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 
উল্লেখ্য, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে মোহাম্মদপুরের বিহারী ক্যাম্প হয়ে বাসার দিকে যাওয়ার সময় ক্যাম্পের সামনে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন রাব্বী। নেশাজাতীয় দ্রব্য কাছে আছে বলে কোনো কিছু না বলেই তল্লাশির চেষ্টা চালায় ওই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা। কোথায় আছে ইয়াবা, নেশাজাতীয় দ্রব্য বা অস্ত্র-সরঞ্জাম জাতীয় কিছু..।
 
এরপর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শুরু হয় লাঠি-রাইফেলের মাথা দিয়ে গুতানো, এক এক করে পোশাক খোলা আর আজেবাজে বকাবকি।
 
গোলাম রাব্বীর অভিযোগ, বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসারের পরিচয় দিয়েও রেহাই মেলেনি।। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, বিসিএস ক্যাডার, পুলিশেরই এসপি পরিচয় দেয়া ভাই থেকে শুরু করে সবারই পরিচয় দিয়েছি। শেষমেষ ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতির নামও বলেছি। কিন্তু তা গ্রহণযোগ্য মনে করেনি। মারধর করেছে। টাকা চেয়েছে। মূলত টাকা দিতে না পারায় বেশি করে মারধর করেছে। পরে রেডিও ধ্বনির সাংবাদিক জাহিদ হাসানসহ তিন-চারজন গিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।



জেইউ/এএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।