প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছে বেতার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্যোগের এ সময়ে সঠিক বার্তা, দিকনির্দেশনা, সর্বোপরি করোনা মোকাবিলায় সরকার গৃহীত নানা উদ্যোগ এবং এ মহামারি থেকে সুরক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে এসেছে বেতার, অর্জন করেছে আস্থার জায়গা। এছাড়া আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, সঠিক সংবাদ ও প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত প্রচার এবং সৃজনশীল অনুষ্ঠান বেতারকে আরও শ্রোতামুখী করছে প্রতিনিয়ত।
রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ‘বিশ্ব বেতার দিবস-২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে আমি বেতারের শিল্পী, শ্রোতা, সম্প্রচারকর্মী ও কলাকুশলীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য- ‘সবাই মিলে বেতার শুনি, বেতারেই আস্থা রাখি’ নির্ধারিত হয়েছে। করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে এ প্রতিপাদ্য অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে মনে করি আমি।
তিনি বলেন, ১৯৩৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, কৃষি উন্নয়ন, সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, শিক্ষার মানোন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসসহ সার্বিক উন্নয়নে বেতারের ভূমিকা অনবদ্য। ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ হিসেবে আত্মপ্রকাশের মধ্যদিয়ে ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তি সংগ্রামে বাংলাদেশ বেতারের অনন্য ভূমিকা সর্বজনবিদিত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ তৎকালীন স্বৈরশাসকের বাধার মুখে ৮ মার্চে বেতারে প্রচার করা, মুক্তিকামী বাঙালিকে উদ্বুদ্ধকরণ এবং সর্বোপরি স্বাধীনতা অর্জনে বাংলাদেশ বেতার সবসময় এদেশের জনগণের পাশে থেকেছে।
আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই দেশে গণমাধ্যমের বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আমরাই দেশে প্রথম বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চালুর অনুমোদন দিই। আমরা ২০০৯ সাল থেকে গণমাধ্যম, তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ প্রণয়ন করে তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছি। জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা-২০১৪ প্রণয়ন করা হয়েছে। বেসরকারি খাতে অনেকগুলো টেলিভিশন, এফএম রেডিও এবং কমিউনিটি রেডিও চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণের ফলে টেলিভিশন সম্প্রচারে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। দেশের গণমাধ্যম এখন পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বৈচিত্র্যময় অনুষ্ঠান ও সংবাদ সম্প্রচারের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় নিরন্তর সেবা পৌঁছে দিচ্ছে বেতার। সম-সাময়িক যুগের চাহিদা মেটাতে বর্তমানে অ্যাপসের মাধ্যমে বাংলাদেশ বেতারের সংবাদ ও অনুষ্ঠান ইন্টারনেটে দেশের পাশাপাশি বহির্বিশ্বের শ্রোতার কাছেও পৌঁছে যাচ্ছে। বাংলাদেশ বেতার নানা আয়োজনের মাধ্যমে জাতির জনক জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ পালন করছে। এ আয়োজনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ বেতারের সংবাদ ও অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন, সাংগঠনিক দক্ষতা, ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্ব ও রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তার ভূমিকার ওপর বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন ও তথ্যসমৃদ্ধ অনুষ্ঠান প্রচার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বেতার আমাদের সরকারের চলমান ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ও দেশের মানুষের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে বলে আমি প্রত্যাশা করি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, ইনশাল্লাহ। আমি ‘বিশ্ব বেতার দিবস-২০২২’—এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
এইচএস/এমএএইচ/