বগুড়ায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে শ্রমিক লীগ কর্মী নিহত
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে আওয়ামী লীগ-শ্রমিক লীগ ও জাতীয় পার্টির সমর্থকদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে শফিকুল ইসলাম (৩২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চলছে।
নিহত শফিকুল ইসলাম শ্রমিক লীগ কর্মী বলে জানা গেছে। তিনি সান্তাহার পৌর শহরের চাবাগান এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে এবং পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী উপজেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম বাদশার ছোট ভাই।
এদিকে, শ্রমিকলীগ কর্মী খুনের ঘটনায় জাতীয় পার্টির এক নেতার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও বেশ কিছু রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। এছাড়া বগুড়া শহর থেকে বিপুল সংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পৌর নির্বাচনে জাপার ভোট বিএনপি মনোনীত প্রার্থীকে দেয়া হয়েছে- এমন অভিযোগ করে আসছিলেন রাশেদুল ইসলাম। আর এ কারণেই তিনি পরাজিত হন বলে দাবি করছিলেন। এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে জাপার সঙ্গে শ্রমিক লীগ ও আওয়ামী লীগের এক অংশের নেতাকর্মীদের উত্তেজনা চলছিল।
শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে নিহত শফিকুল ইসলামের সঙ্গে স্থানীয় জাপার নেতা ফেরদৌস হাসান সুমনের বিরোধ হয়। আর এরই জের ধরে দুপুর একটার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষ শুরু হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের একটি অংশ জাপার নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগ দেয়। এ সংর্ঘষ চলাকালে শফিকুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন।
পরে বিকেল ৩টার দিকে শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা শহরের ডেইলি বাজার এলাকায় সুমনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলে নিক্ষেপ করছে।
সান্তাহার শহরের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও শ্রমিক লীগ মিলে মহাসড়কে সিএনজি ও অটোরিকশা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। পৌর নির্বাচনের পর থেকেই এক পক্ষ অন্যপক্ষকে নির্বাচনী বিরোধে ঘায়েল করা চেষ্টা করছিলো। আর এরই ফলশ্রুতিতে এই হামলা চালানো হলো।
এ ব্যাপারে জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দিন শেখ হেলাল জানান, আমরা চাই ঘটনা তদন্ত করে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। আর তা না হলে বগুড়া জেলার সমস্ত শ্রমিকরা কঠোর আন্দোলনে যাবে।
আদমদীঘি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবির জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বগুড়ার অতিরিক্তি পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জেলার সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারাও সেখানে অবস্থান করছেন। কি কারণে এই ঘটনা ঘটেছে সেটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লিমন বাসার/এআরএ/এমএস