লাউতলায় চেয়ার-টেবিল পেতে অফিস করলেন মেয়র আতিক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩০ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২২

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলার লাউতলা খালের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং খাল খননে অভিযান পরিচালনা করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

অভিযানের দ্বিতীয় দিন সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সরাসরি তদারকি করছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। তবে নগর ভবনে যাতে অন্যান্য কাজের ফাইল আটকে না যায়, সে জন্য তিনি লাউতলায় চেয়ার-টেবিল পেতে ভ্রাম্যমাণ অফিস করছেন।

ডিএনসিসির সচিব দপ্তর সূত্র জানায়, অভিযানের কারণে গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি দাপ্তরিক কার্যক্রম যাতে থেমে না থাকে, সে জন্যই মেয়র ভ্রাম্যমাণ অফিস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বেশ কিছু জরুরি ফাইল ও নথিতে সই করেছেন। কাজের প্রতি মেয়রের এমন দায়িত্ববোধ দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মোহাম্মদপুরের বাসিন্দারা। এ ছাড়া খালের জায়গা উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে ওই খালে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে ডিএনসিসি। অভিযানে অর্ধশতাধিক ছোট-বড় ভবন ভেঙে দেওয়া হয়। সোমবার বেলা ১১টায় ফের অভিযান শুরু হয়। অভিযানের শুরুর আগে নিজ হাতে খালের সীমানার দুইপাশে খুটিতে লাল পতাকার টাঙান। বিকেল তিনটা পর্যন্ত লাউতলায় অবস্থান করেছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।

বেলা ১১টায় উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরুর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএনসিসি মেয়র। তিনি বলেন, খালটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ যা থাকার কথা বাস্তবে তার কিছুই নেই, অবৈধভাবে দখল ও স্থাপনা নির্মাণ করে খালটির অস্তিত্বই বিলীন করে দেওয়া হয়েছে। তাই প্রায় আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট খালটিকে উদ্ধার করে বুড়িগঙ্গা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। এ জন্য কোনো অবৈধ দখলদারকে নোটিশ দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, বসিলায় শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার মাঠ নেই। আনন্দ-বিনোদনের জায়গাও নেই। সবাই বসিলা কবরস্থানের খালি জায়গায় বেড়াতে যায়। এটাতো বেড়ানোর জায়গা না। তাই স্থানীয়দের জন্য এ খাল খনন করা হচ্ছে। খালের একপাশ ঘিরে পার্ক করা হবে। মানুষের হাঁটাচলার পথ তৈরি করা হবে।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। নগরীকে জলজট কিংবা জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্ত করতে হলে যেকোনো মূল্যে খালগুলো উদ্ধার করতেই হবে। এখন বিভিন্ন জায়গায় খাল উদ্ধার ও পরিষ্কার কার্যক্রম চলছে।

দুপুর দেড়টার দিকে বছিলার লাউতলার একটি মার্কেটের বারান্দায় ছোট একটি টেবিল ও তিনটি চেয়ার নিয়ে বসেন আতিকুল ইসলাম। পাশে বসেন করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা। তাদের পেছনে ব্যানারে লেখা 'ভ্রাম্যমাণ অফিস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন'। একপর্যায়ে মেয়র টেবিলে রাখা কিছু ফাইল যাচাই করে সই করেন। পাশেই উচ্ছেদের কার্যক্রম চলছে।

বসিলায় ভ্রাম্যমাণ অফিস করার বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, নিজে উপস্থিত থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছি। কারণ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খাল খনন করা একটি চ্যালেঞ্জের কাজ। তবে, এসময় যাতে নগর ভবনে অন্যান্য কাজের ফাইল আটকে না যায়, সে জন্য এ ভ্রাম্যমাণ অফিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডিএনসিসির সংশ্লিষ্টরা জরুরি ফাইল নিয়ে বসিলায় এলেই তা সই করে দিচ্ছি।

মেয়রের এ ভ্রাম্যমাণ অফিস কার্যক্রম এবং উচ্ছেদ অভিযান ডিএসসিসির ফেসবুক পেজে লাইভ করছে সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগ। এ লাইভের কমেন্টে মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা গাজী লিখেছেন, ‘মেয়র সাহেব এগিয়ে যান আপনার কর্মকাণ্ডে, আমরা মোহাম্মাদপুরবাসী আপনার সঙ্গেই আছি।’

এমএমএ/এমএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।