‘কোনো বিলে আমার সই নাই, অধিকাংশ অভিযোগই অপপ্রচার’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:০৭ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০২২
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী/ফাইল ছবি

শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) লিয়াকত আলী লাকী বলেছেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো এসেছে, তার অধিকাংশ অপপ্রচার। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন তিনি।

রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় লিয়াকত আলী লাকী দুদক কার্যালয়ে হাজির হন। সংস্থাটির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়ার সমন্বয়ে গঠিত টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে, যা শেষ হয় দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে লাকী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা ২৬ কোটি টাকা উত্তোলনের কথা বলছেন, সেটা হবে ২১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৮ কোটি টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। ১৩ কোটি টাকা বেতন-বোনাস, পৌরকর ও বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে দেড় কোটির মতো ভ্যাট-ট্যাক্সে জমা হয়েছে। মন্ত্রণালয়েরও বিভিন্ন বিল পরিশোধ করেছি।’

পত্রিকায় খবর এসেছে। ভুয়া বিল ভাউচারে দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে, এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি দুদকে সব কাগজপত্র উপস্থাপন করেছি। বলেছি, ওই বিল পরিশোধই করা হয়নি। কোনো বিলে আমার স্বাক্ষর নেই। এটা একটা অপপ্রচার। আপনারা সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করবেন।’

তার বিরুদ্ধে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে একাডেমির বিপুল অর্থ আত্মসাৎসহ কয়েকটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এলে যাচাই-বাছাই করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

গত বুধবার (৫ জানুয়ারি) শিল্পকলা ডিজিকে দুদকে আসতে নোটিশ পাঠানো হয়। একই দিন শিল্পকলার গত দুই অর্থবছরের বাজেট, ব্যয় এবং ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের নথিপত্র চেয়ে শিল্পকলার মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর কাছে নোটিশ পাঠায় দুদক।

চলতি বছরের শুরুতে লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে শত কোটি টাকা আত্মসাৎসহ বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য টিম গঠন করে দুদক।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়ার সমন্বয়ে টিম গঠন করা হয়েছে এবং পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

দুদকে আসা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক যুগ ধরে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকা লিয়াকত আলী লাকী অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি তহবিল থেকে ২৬ কোটি টাকা তুলে নেন বলে অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ সালের ৩০ জুন শিল্পকলা একাডেমির আগের সচিব নওশাদ হোসেন বদলি হন। সেদিনই নতুন আদেশ জারি করে একাডেমির চুক্তিভিত্তিক পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিমকে সচিবের দায়িত্ব দেন শিল্পকলার ডিজি। ৩০ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ২৬ কোটি টাকা বিভিন্ন কৌশলে উত্তোলন করেন লাকী। পরস্পর যোগসাজশে এই অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের মধ্যে আরও রয়েছে সঙ্গীত বিভাগের কক্ষে ব্যবহারের জন্য পর্দা, ক্রোকারিজ ও ফার্নিচার না কিনে ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ বরাদ্দ, ডান্স এগেইনস্ট করোনা কর্মসূচির আওতায় নৃত্যদলের সম্মানী, কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ক্রয়, ডকুমেন্টেশন, প্রপস-কস্টিউম, প্রচার ও বিবিধ ব্যয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের বরাদ্দ।

এসএম/এমআরআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।