সমাবেশের শর্ত ভঙ্গ : দায় কার?
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দেয়া ১৯ শর্তে রাজধানীর পৃথক তিনটি স্থানে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছিল বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ। বিএনপি পুরানা পল্টনস্থ তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমাবেশ ডেকে ছিল পৃথক ২টি স্থানে। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ ও ধানমন্ডিস্থ রাসেল স্কয়ারে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কোনো দলই সমাবেশকালে ডিএমপির দেয়া ১৯ শর্তের ৩/৪ টি শর্ত স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে। তবে এ নিয়ে দায় আসলে কার? পুলিশ নাকি রাজনৈতিক দল দুটির? বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এবং পুলিশ কোনো পক্ষই দায়বদ্ধতা স্বীকার করেনি। দল ২টির বিরুদ্ধে শর্ত লঙ্ঘনের দায়ে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা তাও স্পষ্ট করেনি পুলিশ।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ও ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দায়সাড়া কথা শোনা গেছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক দল দুটিও এড়িয়ে গেছেন শর্ত ভঙ্গের দায়বদ্ধতা।
সমাবেশের শর্ত ভঙ্গ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হাসান সরদার জাগো নিউজকে বলেন, “ডিএমপি ১৯ শর্তে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছিল। সমাবেশ করার ক্ষেত্রে শর্ত লঙ্ঘন হয়েছিল কিনা তা মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বশীল পুলিশ সদস্যরা বলতে পারবেন। তারা এব্যাপারে কোনো অবজারভেশন দেননি।”
এব্যাপারে মতিঝিল বিভাগের কর্তব্যরত এক এডিসি জাগো নিউজকে নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘সমাবেশকালে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ বেশ কয়েকটি শর্ত লঙ্ঘন করেছে। তবে এ ক্ষেত্রে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে তা আমি বলতে পারবো না। ডিএমপি সদর দফতর ভালো বলতে পারবে।’
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, শর্ত লঙ্ঘন হয়েছে এমন কিছু তারা দেখতে পাননি! তবে শর্ত লঙ্ঘন হয়ে থাকলে এর দায় পুলিশের না।
তিনি বলেন, “মতিঝিল বিভাগে দায়িত্বশীল হিসেবে আমি বলতে পারি, সুষ্ঠু ও নিরাপদে সমাবেশ শেষ করা। আমি সেটা পেরেছি। শর্ত ভঙ্গ হয়ে থাকলে এব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে ডিএমপি সদর দফতর। আর শর্ত ভঙ্গের দায়বদ্ধতা কী হতে পারে তা বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করতে পারেন।”
এ ব্যাপারে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, বিএনপি কোনো শর্ত লঙ্ঘন করেনি। যথা সময়ে সমাবেশ শুরু করে মাগরিবের নামাজের আগেই আমরা শেষ করেছি।
মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসা যাবে না ও রাস্তা ব্লক করে দিয়ে সমাবেশ করা যাবে না এমন ২টি শর্তও ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, “লোকজন বেশি হলে দাঁড়ানোরও তো একটা স্পেস লাগবে। রাস্তা তো আমরা বন্ধ করিনি। পুলিশই করেছে। আর কোনো পলিটিক্যাল পার্টির সমাবেশে মিছিল আসে না? সব দলেরই আসে। গতকাল ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতাবার্ষিকীতে পুরো রাজধানী স্থবির হয়ে গিয়েছিল। তা দেখার কে আছেন বলেন?”
একই দাবি করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক পর্যায়ের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো ধরনের শর্ত লঙ্ঘন করেনি। যথাসময়ে ও শর্ত মেনেই সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। আর সে জন্য আওয়ামী লীগের দায়বদ্ধতার কোনো প্রশ্নেই আসে না। তবে রাসেল স্কয়ারের যথাসময়ে সমাবেশ শেষ করতে পারেননি বলে জানান তিনি।
জেইউ/বিএ