নাসিক নির্বাচন: কে কোথায় ভোট দেবেন
রাত পোহালেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জ নগরীকে। নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়াইয়ে থাকছেন বিএনপির বিভিন্ন পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।
তবে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানীয় প্রভাব বিরাজমান থাকবে ভোটের মাঠে। শামীম ওসমান আইভির পক্ষে কাজ করতে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেও ভোটের মাঠের চিত্র ভিন্ন। যার ফলে এবারের হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে। রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভি ভোট দেবেন দেওভোগ শিশুবাগ স্কুলে। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার ভোট দেবেন নারায়ণগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল (এমএ) মাদ্রাসা কেন্দ্রে।
অন্যদিকে, সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করেছেন। সিটির বাইরে এনায়েত নগর ইউনিয়নের ভোটার তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং নয়টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ১৯২টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। মোট ভোটার পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৪ এবং নারী ভোটার দুই লাখ ৫৭ হাজার ৫১৯ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন চারজন। সবকটি কেন্দ্রেই ভোট হবে ইভিএমে।
সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং তৈমূর আলম খন্দকারের পাশাপাশি মেয়র পদে আরও পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে ভোটে তাদের নির্বাচিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন এবং সংরক্ষিত নয়টি ওয়ার্ডে ৩৪ জন নারী প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে থাকছেন। এর মধ্যে ২১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৯ আসামি, যাদের বিরুদ্ধে খুন, গুম, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, অস্ত্র, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা আছে। এমনকি কারাভোগ করা আসামিরাও এই নির্বাচনে লড়ছেন।
এদিকে নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। ভোটের আগের দিন শনিবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. জায়েদুল আলম বলেন, নির্বাচনে কোনো সহিংসতার আশঙ্কা নেই। নির্বাচনের দিন কোনো বহিরাগতকে নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করতে দেবো না। ভোটের দিন সবাইকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে চলাচল করতে দেওয়া হবে।
নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশ্বস্ত করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহও। তিনি বলেন, আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হবে।
জানা গেছে, নির্বাচনে ১৯২টি ভোটকেন্দ্র ও কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাঁচ হাজারের বেশি সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। প্রতি কেন্দ্রে থাকবেন পুলিশ-র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২৬ সদস্য। যে কোনো অপ্রীতিকর অবস্থা তৈরি হওয়ার আগেই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত থাকবেন।
টিটি/কেএসআর