স্বামীর পরকীয়ার বলি হলেন পলি
যৌতুক এবং পরকীয়া প্রেমের বলি হলেন পলি বেগম (২৫)। এ ঘটনা ঘটেছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার টাউন চিকন্দী গ্রামে।
সোমবার রাতে শরীয়তপুর সদর উপজেলার টাউন চিকন্দী গ্রামের মৃত মো. ইব্রহীম আকনের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আকনের (৩২) বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
পালং মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পলি বেগম এবং তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে পারিবারিক মনোমালিন্য ছিল। তারই রেশ ধরে পলি বেগম আত্মহত্যা করেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ সাত বছর পূর্বে নড়িয়া উপজেলার কোয়ারাগ গ্রামের আবুল হাসেম খানের মেয়ে পলি বেগমের সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলমের বিয়ে হয়। বিয়ে হওয়ার পর থেকেই জাহাঙ্গীর আলম আকন যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন এবং মাঝে মাঝে শারীরিক নির্যাতন করেন। কখনো কখনো স্বামী জাহাঙ্গীর আকনের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে পলি বেগম বাবা আবুল হাসেম খানের কাছ থেকে টাকা এনে দিতেন। তাতেও তিনি ক্ষান্ত হননি। বরং জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে অন্য এক নারীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
যা বিয়েতে রূপ নেয়ার পায়তারা চলছিল। এ ব্যাপারটি পলি বুঝতে পারলে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর পলি বেগমকে আবারও যৌতুকের জন্য চাপ দেন এবং শারীরিক নির্যাতন চালালে পলির মৃত্যু হয়। পরে স্বামী জাহাঙ্গীর আলম ও তার মা আলেয়া বেগম এবং ছোট ভাই নূরা আকন তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে বিষ খাওয়ার কথা প্রচার করেন এবং তাকে চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে এটি হত্যা, নাকি আত্মহত্যা এ বিষয়টি এখনো পরিস্কার নয়।
ইয়াসিন (৬) এবং ইয়ামিন (৩) নামে তাদের দুই সন্তান আছে। পলি বেগমের বড় ভাই মনির হোসেন খান জাগো নিউজকে বলেন, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য আমার বোনকে মারধর করতো জাহাঙ্গীর। গত ডিসম্বর মাসে এক লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে। কিন্তু আমরা দিতে না পারায় পলিকে মেরে ফেলেছে সে।
পলি বেগমের বড় ভাই অসিম খান জাগো নিউজকে বলেন, জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে অন্য একটি নারীর প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। সে কারণে আমার বোনের সঙ্গে কথা কাটকাটি হয়। এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীরের মা, ভাই মিলে আমার বোনকে মেরে ফেলেছে।
পলি বেগমের মা আলেয়া বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার মেয়েকে জাহাঙ্গীর আলম তার মা আলেয়া বেগম এবং ছোট ভাই নূরা আকন পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি তাদের বিচার চাই।
পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান বলেন, মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মো. ছগির হোসেন/এমজেড/পিআর