ব্রিজের অভাবে ২২ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ


প্রকাশিত: ০৬:৫১ এএম, ০৫ জানুয়ারি ২০১৬

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে ফটকি নদী। এ নদীই আবার ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলাকে আলাদা করেছে। নদীর এক পাশে আছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা আর অন্যপাশে আছে মাগুরার শালিখা উপজেলা।

বাশেঁর সাঁকো বানিয়ে স্থানীয়রা যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক রাখার চেষ্টা করলেও বছরে বেশিরভাগ সময়ে পানিতে ডুবে যায় সাঁকো। ফলে পার্শ্ববর্তী প্রায় ২২ গ্রামের মানুষের যোগাযোগের আর কোনো উপায় থাকে না।  

সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাটোপাড়া ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার পূর্বাঞ্চলের শেষ গ্রাম। এই গ্রামের অপরপ্রান্তে রয়েছে মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার মশাখালী। নাটোপাড়ার পাশ দিয়ে ফটকি নদী বয়ে মাগুরার মধ্যে প্রবেশ করেছে। আর এই নদীতে নাটোপাড়া গ্রামের নিচে রয়েছে একটি ঘাট। যে ঘাটের দুইপ্রান্তে রয়েছে পিচঢালা পথ। আর এই পিচঢালা পথই ঝিনাইদহ থেকে শালিখা যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু ঘাটে সেতু না থাকায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। বর্ষা মৌসুমের প্রায় ৫ থেকে ৬ মাস নদীতে পানি বেশি থাকায় যোগাযোগ একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। আর অন্য সময়ে এলাকার মানুষ বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে চলাচল করে।

এলাকাবাসী বলছেন, ফটকি নদীর এই ঘাটটি দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সেভাবে গুরুত্ব দেন না। আর এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবেন বলে দায়িত্ব শেষ করেন। সাধারণ মানুষের ধারণা জনপ্রতিনিধিদের ঠেলাঠেলি আর প্রশাসনের গাফিলতির কারণে ওই ঘাটে সেতু নির্মাণ হচ্ছে না। তারা বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে দেখার জন্য অনুরোধ করেছেন।

নাটোপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল কাদের বিশ্বাস বলেন, নদীর একপ্রান্তে ঝিনাইদহের নাটোপাড়া, চটকাবাড়িয়া, বামনাইল, মিয়াকুন্ডু, কুশোবাড়িয়া, মুনুড়িয়া, টিকারী আর একপ্রান্তে মাগুরা জেলার কোটবাগ, দোবিলা, বগুড়া, বাইসা, পিপরুল, আমিয়ান, নরবাইসা, ধাওখালী, সিমাখলীসহ অনন্ত ২২ গ্রামের মানুষ এই ঘাট দিয়ে পারাপার হয়ে থাকে। ঘাটের দুই প্রাপ্তে সিংগা, দোবিলা, নাটোপাড়া ও কুশবাড়িয়া বাজার রয়েছে। এই বাজারে দৈনন্দিন সব কাজ মেটান ওই গ্রামগুলোর মানুষ। কিন্তু বছরের বেশির ভাগ সময় একপ্রাপ্তের মানুষ আরেক প্রান্তে যেতে পারেন না। নদীটি তাদের পৃথক করে রেখেছে।

আরেক বাসিন্দা শাহনেওয়াজ খাঁন বলেন, তাদের বাজারে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। আর নদীর অপরপ্রান্তে রয়েছে মাধ্যমিক বিদ্যালয়। দুই প্রান্তের বাচ্চাদের পড়ালেখা করতে নদী পার হতে হয়। কিন্তু বর্ষার সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।

তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় তাদের এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হচ্ছে না। এই কারণে তারা নাটোপাড়ার ঘাটে একটি সেতুর জন্য বছরের পর বছর জনপ্রতিনিধি ও সরকারি লোকজনের কাছে ধরনা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনো ফল হচ্ছে না। সকলেই প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু সেতু হয় না।

এ ব্যাপারে এলজিইডির কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত ওই স্থানে সেতু নির্মাণের বিষয়ে কোনো প্রকল্প হাতে নেয়া হয়নি। তবে স্থানীয় জনসাধারণের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে সেতুর বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে বলে তিনি উল্লে­খ করেন।  

এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।