ভূমিকম্পে জাবির হলে ফাটল


প্রকাশিত: ১১:০৯ এএম, ০৪ জানুয়ারি ২০১৬

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলের সম্প্রসারিত ভবনের বিভিন্ন অংশে অন্তত ৩৫-৪০টির মতো মারাত্মক ফাটল দেখা দিয়েছে। সোমবার ভোরে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে হলের বিভিন্ন অংশে এ ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। বড় ধরনের প্রাণহানি থেকে হলে বসবাসরত প্রায় ২শ’ শিক্ষার্থী রক্ষা পেয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম, ট্রেজারার অধ্যাপক আবুল খায়ের, প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা, প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক হাফিজুর রহমান, আল-বেরুনী হলের প্রভোস্ট ড. এ কে এম জসীম উদ্দীন, হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষক শেখ আদনান ফাহাদ ও প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আবদুস সালাম মো. শরীফসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সোমবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত হলটি পরিদর্শন করেছেন।

JU-Fatol

এদিকে হলটির একাধিক স্থানে ফাটল দেখা দেয়ায় আপাতত পরিত্যক্ত ঘোষণা করা চিন্তা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। হলের দুর্বল অবকাঠামো ও দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ভূমিকম্পে এমন নাজুক পরিস্থিতির হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ১৯৮২ সালে নির্মিত হয় হলের এ সম্প্রসারিত ভবন।

হল পরিদর্শনের শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, “আমরা আলোচনা করে অতি শিগগিরই সিদ্ধান্ত নিব। শিক্ষার্থীদের জান-মালের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।”

JU-Fatol

এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, হলটির ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ব্লকের উত্তর দিকের দেয়ালে প্রায় ২০ ফুট জায়গা জুড়ে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ব্লকটির শিক্ষার্থীদের থাকার অধিকাংশ কক্ষেও দেখা দিয়েছে ভয়ংকর ফাটল। হলের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতি মিলনায়তনের টিভির রুমের পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকের দেয়ালের ভেতরে ও বাইরে কয়েক ফুট জায়গাজুড়ে বড়সড় ফাটল দেখা দিয়েছে। হলের ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ (১১০০) ও ইঞ্জিনিয়ার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন (১০০০) ব্লকের বেশ কয়েকটি কক্ষের দেয়াল ও মেঝেতে ফাটল ধরেছে।
 
এছাড়া হলের মসজিদ, কমনরুম, গেস্টরুম, ডাইনিং রুম ও স্টাফরুমেও দেখা দিয়েছে বেশ কয়েকটি ফাটল। হলের ৬টি ব্লকের অধিকাংশ কক্ষে চিড় ধরেছে।

JU-Fatol

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মল্লিক বিশ্বাস বলেন, ভোরে ভূমিকম্প শুরু হলে মুহূর্তের মধ্যে আমাদের ব্লকে ফাটল দেখা দেয়। এ সময় ভয়ে আমরা রুমের বাইরে চলে আসি। আমাদের আতংক এখনও কাটেনি।
 
হলের এক কর্মচারী বলেন, “১৯৮২ সালে শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করার জন্য মাত্র ২ মাসের মধ্যে হলটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর থেকেই নানা সমস্যা লেগেই আছে হলটিতে। বার বার জোড়াতালি দিয়ে হল আর কতদিন চলতে পারে?”
 
JU-Fatol

এ প্রসঙ্গে হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষক শেখ আদনান ফাহাদ জাগো নিউজকে বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব হলটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে নতুন ভবন নির্মাণ করা উচিৎ।”

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হল মুল ভবন, ফজিলাতুন্নেসা হল, জাহানারা ইমাম হল, ব্যাচেলর টিচার্স কোয়ার্টার, শিক্ষক ক্লাব, অফিসার্স ক্লাব, প্রকৌশল অফিস, পুরাতন কলা ভবন, জিমনেসিয়াম, শহীদ সালাম-বরকত ও কামালউদ্দীন হলের সম্মিলিত মসজিদসহ একাধিক ভবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সূত্রে জানা গেছে।

হাফিজুর রহমান/আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।