আগামী ডিসেম্বরে পদ্মা সেতু রেল সংযোগের কাজ শেষ হবে: রেলমন্ত্রী
চলতি বছরের ডিসেম্বরে ঢাকা-মাওয়া এবং জাজিরা-ভাঙ্গা রেললাইন স্থাপনের কাজ শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর রেল ভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সম্প্রসারণ, আধুনিকায়ন ও বিনিয়োগে আকর্ষণের জন্য ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর রেলমন্ত্রীর নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল যুক্তরাজ্য, জার্মানি, স্পেন ও ফ্রান্সে সফর করেছিল। এ সফর উপলক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু দিয়ে যেদিন গাড়ি চলবে, একই দিন রেল চালুর পরিকল্পনা ছিল। এখন সেতুর দুই পারে ঢাকা-মাওয়া এবং শরীয়তপুরের জাজিরা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের কাজ চলছে। কিন্তু পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপনের কাজ বন্ধ রেখেছে।
তিনি বলেন, সেতু নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা সেখানে কাজ শুরু করতে দিচ্ছে না। আগামী জুনে এই সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর পুরোদমে রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরু হবে। আশা করি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো কাজ শেষ করতে পারবো।
চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন স্থাপনের কাজও শেষ হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি কাজ শেষ হয়েছে। কক্সবাজারে আইকনিক রেলস্টেশন স্থাপনসহ এই পথে সাতটি লোকাল রেলস্টেশন স্থাপন করা হচ্ছে। আশা করি ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
কক্সবাজারের রামু থেকে ঘুমধুম সীমান্ত পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের কাজ বন্ধ থাকার বিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের আওতায় রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের পরিকল্পনা ছিল। এই রেললাইন ঘুমধুম থেকে মিয়ানমার হয়ে চীন পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ার কথা ছিল, যা ট্রানসলেশন রেলওয়ের কোয়ার্টারে সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে। কিন্তু মিয়ানমার অংশে এই রেললাইন স্থাপনের সমীক্ষা করা হয়নি। তাই প্রকল্পের ওই অংশের কাজ বন্ধ।
ইউরোপের দেশগুলো রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাংলাদেশের চেয়ে অন্তত ৭০ বছর এগিয়ে আছে জানিয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ১৯৭৫ সালের পর দেশে রেলব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অনেক এলাকায় রেললাইন বন্ধ হয়ে গেছে। শতাধিক রেলস্টেশনও বন্ধ। এমন অবস্থা ২০১১ সালে রেলকে আধুনিকায়নে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি রেলের মানোন্নয়নে ব্যাপক গুরুত্ব দিচ্ছেন। কয়েক মাস আগে তিনি ইউরোপে সফর করেছেন। পরে তিনি ইউরোপের মতো বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়নে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তাই মন্ত্রণালয়ের আট সদস্যকে নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সফর করেছি। এই সফরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশের রেলব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করা হবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর উপস্থিত ছিলেন।
এমএমএ/এমআরএম/এএসএম