ঢাকা নগর পরিবহন: স্বস্তির পাশাপাশি মিলছে অভিযোগও
রাজধানীতে চলছে বাসরুট রেশনালাইজেশন কমিটির পরীক্ষামূলক প্রকল্প ‘ঢাকা নগর পরিবহন’। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ঢাকার ঘাটারচর-কাঁচপুর ব্রিজ রুটে এই পরিবহন চলাচল করছে।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সরেজমিনে ওই পরিবহনের যাত্রীদের স্বস্তির পাশাপাশি কিছু অভিযোগের কথাও জানা যায়। কাউন্টারে থাকা বিক্রয় প্রতিনিধি ও যাত্রীদের অভিযোগ, কাউন্টারের সামনে এসে বাস ও রিকশার জটলা হওয়ায় বাসগুলো থামানো, ওঠানামায় সমস্যা হচ্ছে।
রাজধানীর গণপরিবহনে চলছে নানা বিশৃঙ্খলা। এসব বিশৃঙ্খলা এড়াতে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির উদ্যোগে পরীক্ষামূলকভাবে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত সাড়ে ২৭ কিলোমিটার রুটে ৫০টি বাস নিয়ে এ সার্ভিস চালু হয়। বিআরটিসির ৩০টি ডাবল ডেকার ও ট্রান্স সিলভা পরিবহনের ২০টি বাস নিয়ে এই সার্ভিস শুরু হয় রোববার।
জানা গেছে, ১০ মিনিট পরপরই কাউন্টারে বাস এসে থামছে। তবে রিকশা ও অন্যান্য গণপরিবহনগুলো কাউন্টারের সামনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকায় বাস দাঁড়াতে ও যাত্রীদের ওঠানামা করতে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া কাউন্টার ছাড়া যাত্রী না তোলায় অনেকটা ফাঁকাই থাকছে বাসগুলো।
এ বিষয়ে শাহবাগে কাউন্টারে থাকা বিক্রয় প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন জানান, নতুন বলে এখনো মানুষজন তেমন জানে না। অন্য পরিবহনের মতো কাউন্টার ছাড়া মানুষও তোলা হয় না। তাই লোকজন কিছু কম।
রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড় থেকে সিটি কলেজে আসা যাত্রী মাসুদ রানা বলেন, নতুন হিসেবে সার্ভিসটি বেশ ভালো। লোক যত জনই হোক কোথাও থামায় না। ভাড়াও অন্যদের চেয়ে কম।
অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নামের আরেক যাত্রী বলেন, নতুন হিসেবে এই সার্ভিস খুব ভালো। ভবিষ্যতেও যেন চালু থাকে তাহলে আমরা এটিকে স্বাগত জানাবো। আশা করি সার্ভিস ভালো দেবে এবং জনগণ তাতে উপকৃত হবে।
অন্যান্য পরিবহনের মতো ভিড় নেই নতুন চালু হওয়া ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ এ। পরিবহনের চালক মামুন মিয়া জানান, যাত্রী নেই বাসে। কাউন্টার ছাড়া যাত্রীও তুলি না। তাই অনেকটা ফাঁকাই আছে বাসগুলো।
এদিকে সার্ভিসটি ভালোভাবে চালু রাখার দাবি জানিয়ে পরিবহনটিতে থাকা যাত্রী রুয়েটের শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, ‘কাউন্টারে টিকিট কাটার সিস্টেমটা অনেক ভালো লাগছে। আর রুটের ডান পাশ দিয়ে চলে। জ্যামে পড়ে না, থামেও না। তবে যাত্রীদের চাপে মাঝে মাঝে কাউন্টার ছাড়া নামাতে দেখেছি’।
বাসের জন্য শাহবাগ কাউন্টারে অপেক্ষা করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমেনা আক্তার বলেন, প্রথম দিন ভালো ছিল। এখন দেখি মেয়েদের জন্য সিটিগুলো ফাঁকা থাকে না। সেখানে পুরুষরা বসে থাকে। কাউন্টার ছাড়া যাত্রী না নামানোর কথা থাকলেও নামাতে দেখেছি।
জানা যায়, পরিবহনটিতে শিক্ষার্থী ছাড়া রুটের সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা ও সর্বোচ্চ ৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে দুই টাকা ১৫ পয়সা। তবে কেউ যদি এক স্টেশন থেকে ঠিক পরের স্টেশনেই নামেন তবে ১০ টাকা ভাড়া দিতে হবে নতুন এই পরিবহনটিতে।
আরএসএম/এমআরএম/এএসএম