ঢাবি সিনেটে খালেদা-গয়েশ্বরের মন্তব্যের নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:২৪ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫

মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে সংগঠনটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের কটূক্তির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট অধিবেশনে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের শীতকালীন অধিবেশনে এ নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বিকেল ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সিনেটের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করেন সিনেটের রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট ড. শরফুদ্দিন। তার প্রস্তাবে সমর্থন করেন সিনেটের দুই রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট মঞ্জুর আহসান বুলবুল ও মাহফুজা খানম।

অধিবেশনে ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশে কোনো গণহত্যা হয়নি’ মর্মে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অধিবেশন থেকে বলা হয়, গণহত্যার দায় স্বীকার করে অবশ্যই পাকিস্তানকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। এর আগে একাত্তরে গণহত্যার অপরাধে গত ১৪ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটের এক বিশেষ সভায় পাকিস্তানের সঙ্গে শিক্ষা, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়াসহ সকল সামাজিক সম্পর্ক ছিন্ন করার যে সিদ্ধান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করে, সিনেট অধিবেশনে তার প্রতিও সমর্থন জানানো হয়।

শীতকালীন অধিবেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইনসহ সিনেট সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক তার অভিভাষণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর দেশের এক শ্রেণির রাজনীতিবিদ ৩০ লাখ শহীদের পরিসংখ্যান নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বদা সত্যের অন্বেষণ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার কোনো অপপ্রয়াস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বরদাশত করতে পারে না। বাংলাদেশে গণহত্যা নিয়ে পাকিস্তানের মিথ্যাচারকেও আমরা মেনে নিতে পারি না। এসময় মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের পরিসংখ্যান নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করাকে তিনি মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার শামিল বলে উল্লেখ করেন।

উপাচার্য বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হত্যার মাধ্যমে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশে গণহত্যা শুরু করে এবং ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যার মাধ্যমে গণহত্যার শেষ অধ্যায় রচিত হয়। এই গণহত্যার দায় স্বীকার করে অবিলম্বে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার জন্য তিনি পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানান।

এমএইচ/এসকেডি/পিআর/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।