মাধবদী পৌরসভার নির্বাচন বাতিল
নরসিংদীর মাধবদীতে সংঘর্ষের ঘটনার জের ধরে নির্বাচন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাছাড়া জাল ভোট ও অনিয়মে বাধা দেয়ায় জেলা রিটানিং কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ও সহকারী রিটানিং কর্মকতা নজরুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করেছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা ।
এ ঘটনায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে মুমূর্ষ অবস্থায় টিটু নামের এক যুবককে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। দিনভর নানা উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনার পর বেলা তিনটার দিকে নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করেছে কমিশন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সহকারী রিটানিং অফিসার নজরুল ইসলাম। সেই সঙ্গে বুধবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই আদেশ দেয়া হয়।
এর আগে সকালে বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় নির্বাচন। মাধবদী মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটারদের লম্বা লাইন। সকাল ৮টায় কেন্দ্রে ভোট দেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাজী মো. ইলিয়াছ। তিনি নির্বাচনের পরিবেশ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে সুষ্ঠু নির্বাচনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সকাল সাড়ে ৮টায় টাটাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোশাররফ হোসেন প্রধান মানিক। তিনিও সুষ্ঠু নির্বাচনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তবে অল্প সময়ের মধ্যে ভেস্তে যায় ভোট উৎসব। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের টাটাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর প্রার্থী হাজী মোহাম্মদ মাতবর আলী প্রধান ও দেলোয়ার হোসেনের মধ্যে কথা কাটাকাটির জের ধরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এসময় পুলিশ দেলোয়ার হোসেনের ভাই কাজি ওয়াসিমকে আটক করে।
সকাল ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ফজলুল করিম কিন্ডার গার্টেন স্কুল কেন্দ্র দখল করে প্রকাশ্যে জালভোট প্রদান করে। ওই সময় প্রতিপক্ষ বিএনপির সমর্থকরা তাদেরকে বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বেঁধে যায়। এতে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়।
পরে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এবং কেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ সকল দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে একটি কক্ষে আটকে রেখে জালভোট দিতে থাকে। এই সময় মাধবদী পৌরসভার রিটানিং কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ভোটকেন্দ্র বাতিল ঘোষণা করেন। এতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে তাঁদেরকে লাঞ্ছিত করেন।
সঞ্জিত সাহা/এসকেডি/পিআর