গোবিন্দগঞ্জে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থীর ভোট বর্জন


প্রকাশিত: ১২:২৪ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পৌর নির্বাচনে প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, ওয়ার্কার্স পার্টির মেয়র প্রার্থীর উপর হামলা এবং জাপা মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

শামীম অ্যান্ড শাকিল কারিগরি কলেজ কেন্দ্রে ৯নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুই কাউন্সিলর প্রার্থী শহিদুল ইসলাম (পাঞ্জাবি) ও মাসুদ রানা বাপ্পীর (উট) সমর্থদের মধ্যে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে দুপুর একটার দিকে এক সংঘর্ষের ঘটনায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে পাঁচজন আহত হয়েছেন।

আহতরা হলেন, নজরুল ইসলাম, পারভেজ মিয়া, সাদ্দাম হোসেন, আব্দুল করিম ও মানিক মিয়া। আহতদের গোবিন্দগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ভোট কেন্দ্রের ভেতরে কাউন্সিলর প্রার্থী মাসুদ রানা ও শহিদুল ইসলামের সমর্থকরা পরস্পরের বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ এনে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালান।

তাদের সংঘর্ষের ঘটনায় সাধারণ ভোটাররা আতঙ্কিত হয়ে ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করেন। পরে র্যা ব পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিছু সময় বন্ধ থাকার পর পুনরায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এসময় পুলিশ দুই রাউণ্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

এছাড়া গোবিন্দগঞ্জ মহিমাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে সকালে ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী শাহীন আকন্দ ও জাকিরুল ইসলাম সাজুর সমর্থকদের মধ্যে ভোট কারচুপির অভিযোগে সংঘর্ষ বাধলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ছয় রাউণ্ড ফাঁকা গুলি করে।

অপরদিকে, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আমিনুল ইসলাম গোলাপ অভিযোগ করেছেন আব্দুল মতিন মোল্লাকে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থীর সমর্থকরা লাঞ্ছিত করে জোরপূর্বক মহিলা কলেজ কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। পুলিশ এসময় আওয়ামী লীগ সমর্থকদের পক্ষে অবস্থান নেয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।

অপরদিকে, ভোট কারচুপি, কেন্দ্রে হামলা ও সংঘর্ষের অভিযোগ এনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী আখতার হোসেন জুয়েল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

 বুধবার পৌনে ১২টার দিকে তিনি উপজেলা রিটার্নিং অফিসার শাহীনুর ইসলাম প্রামানিকের কাছে লিখিতভাবে নির্বাচন বর্জনের আবেদন জমা দেন। আখতার হোসেন জুয়েল বলেন, গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বেশ কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে সরকার দলীয় প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা নৌকা মার্কার প্রতীকে সিল মেরে নিচ্ছেন। এমনকি ভোটারদের হাতে কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের ব্যালট পেপার দেওয়া হলেও মেয়রের ব্যালট পেপারে তারা নিজেরাই সিল মেরে নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে একাধিক বার নির্বাচন কর্মকর্তাদের জানানো হলেও কার্যকরী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি তারা। তিনি এসব অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

উপজেলা রিটার্নিং অফিসার শাহীনুর ইসলাম প্রামানিক তার আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী আখতার হোসেন জুয়েল তার কাছে নির্বাচন বর্জনের একটি আবেদন দাখিল করেছেন।
 
অপরদিকে, বিএনপি প্রার্থী ফারুক আহমেদ জাগো নিউজকে জানান, কেন্দ্র দখল, জাল ভোট দেয়াসহ নানা অনিয়মের প্রতিবাদে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।

তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আতাউর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। জনসমর্থন না থাকায় এসব মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।   

এদিকে গাইবান্ধা পৌর নির্বাচনে উত্তরপাড়া ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ও ভোট বাক্স ছিনতাই করার চেষ্টা করা হলে নির্বাচন কর্তৃপক্ষ ভোটগ্রহণ দুপুর পৌনে ২টা থেকে সোয়া ২টা পর্যন্ত আধা ঘণ্টা বন্ধ রাখেন।

পরে স্টাইকিং ফোর্সসহ বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ শহরের ডেভিড কোম্পানিপাড়ার ওই কেন্দ্রে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে আবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এছাড়া গাইবান্ধা পৌরসভার জুবলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ব্রিজ রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাধলে কিছু সময়ের জন্য ভোট গ্রহণ স্থগিত রাখা হয়।

অমিত দাশ/এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।