২০০ টাকায় নির্বাচনী প্রচারণা
কনকনে শীত। সকাল ৭টা। বগুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেল নারীদের মিছিল। তবে এটি মৌন মিছিল। ১০/১২ জনের একেকটি দল পায়ে হেঁটে পাড়া মহল্লার প্রতিটি বাড়িতে যাচ্ছেন। কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীর জন্য ভোট চাইছেন। সারাদিন এই প্রচারণার জন্য একজন নারী পাচ্ছেন ২০০ টাকা। সঙ্গে ৩০ টাকার মোবাইল বিল ও ২০ টাকার চা-নাস্তা ফ্রি।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকার দরিদ্র শ্রেণির নারীরা চালাচ্ছেন বিভিন্ন প্রার্থীর প্রচারণা। প্রতিটি বাসাবাড়িতে বারবার যাচ্ছেন তারা। শহরের বাইরের চিত্রও একই রকমের।
কাহালু উপজেলার হাইস্কুল মাঠে দেখা গেল কয়েকশ নারী। দূর থেকে কেউ দেখলে ভাববে এরা কোনো এনজিও কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের রিলিফ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য এত সকালে হাজির হয়েছেন। কিন্তু না, খোঁজ নিয়ে জানা গেল এরা নির্বাচনী ওয়ার্কার। ওই মাঠে ওই সব মহিলারা আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হেলাল কবিরাজের ডাকে একশ টাকায় প্রচারণার জন্য হাজির হয়েছেন। তারা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই এভাবে হাজির হন।
কাহালু উপজেলার রেললাইন ধরে হেঁটে আসছিল প্রায় ৫০/৬০ জন মহিলা। তাদের জিজ্ঞাসা করে জানা গেল, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবদুল মান্নানের প্রচারণায় অংশ নিতে তারা এসেছেন। তারাও ওই একশ টাকার জন্য সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এভাবেই কাজ করেন।
কাহালু সদরের মর্জিনা, আয়েশা ও জয়নুল বেগম জানান, আমরা আওয়ামী লীগ প্রার্থী হেলাল কবিরাজের ক্যানভাসে এসেছি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একশ টাকা পাই। তাই ক্যানভাসের কাজ করি।
কাহালু জামতলার কুলসুম বেগম জানান, বিএনপির আবদুল মান্নানের ভোটের প্রচার করছি। দিনে একশ টাকা করে পাই।
শুধু কাহালু পৌরসভার নয়, বগুড়ার সবগুলো পৌরসভা নির্বাচনেই দেখা যাচ্ছে এ চিত্র।
ধুনট পৌরসভার তসলিমা জানান, কাজ করি টাকা পাই। ক্যানভাস করে টাকা নিচ্ছি। এতে দোষের কি ?
অপরদিকে বগুড়া সদরের খান্দার এলাকার আছিয়া ও মনিরা জানান, কেউ কোনো কাজে ডাকে না। ইলেকশনের ক্যানভাস করি। দিনে দুইশ টাকা পাই। ভোটের আগে সবাই ডাকে, ভোটের পরে কেউ খোঁজ রাখে না। যা পাই তাই লাভ। ভোট কাকে দেব সেটা আমার মনের ব্যাপার।
এআরএ/পিআর