বক্ষবিদারণে বিশ্বনবী যা বললেন


প্রকাশিত: ১০:৪৮ এএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫

হজরত হালিমা রাদিয়াল্লাহু আনহুর গৃহে থাকাবস্থায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বক্ষবিদারণ করা হয়। সাহাবায়ে কেরামের জিজ্ঞাসায় নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বক্ষবিদারণের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। যা তথ্যভিত্তিক ও ঐতিহাসিক জীবনী গ্রন্থ সীরাতে ইবনে হিশামে উল্লেখ করা হয়েছে-
সাওর ইবনে ইয়াজিদ কতিপয় বিদ্বান ব্যক্তির নিকট থেকে (ইবনে ইসহাকের ধারণা মতে একমাত্র খালিদ বিন মাদান আল কালয়ীর নিকট থেকেই) বর্ণনা করেছেন যে, সাহাবায়ে কেরাম একবার হজরত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার নিজের সম্পর্কে আমাদেরকে কিছু বলুন।’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ’, শোনো। আমি পিতা হজরত ইবরাহিমের দোয়ার ফল এবং ভাই হজরত ঈসার সুসংবাদের পরিণতি। আমি মাতৃগর্ভে আসার পর আমার মা স্বপ্নে দেখেন যে, তাঁর মধ্য থেকে একটা জ্যোতি বের হয় যার আলোয় সিরিয়ার প্রসাদসমূহ আলোকিত হয়। আর হাওয়াযেন গোত্রের বনী সায়াদ বিন বকর শাখার আমি ধাত্রীর কোলে লালিত-পালিত হই। এই সময় একদিন আমার এক দুধভাই-এর সাথে আমাদের (ধাত্রী মাতা হালিমার) বাড়ীর পেছনে মেষ চরাতে যাই। তখন সাদা কাপড় পরা দু’জন লোক আমার কাছে আসে। তাদের কাছে একটা সোনার তশতরী ভর্তি বরফ ছিল। তারা আমাকে ধরে আমার পেট চিড়লো। অতঃপর আমার হৃদপিণ্ড বের করে তাও চিরলো এবং তা থেকে এক ফোটা কালো জমাট রক্ত বের করে তা ফেলে দিল। তারপর ঐ বরফ দিয়ে আমার পেট ও হৃদপিণ্ড ধুয়ে পরিষ্কার করে দিল। অতঃপর তাদের একজন অপরজনকে বললো, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাঁর উম্মাতের দশজনের সাথে ওজন কর। সে আমাকে পরিমাপ করলো এবং আমি দশজনের চাইতে বেশি হলাম অতপর সে আবার বললো, তাঁকে তাঁর উম্মাতের একশ’ জনের সাথে ওজন কর। আমি একশ’ জনের চাইতেও বেশি হলাম। অতপর সে আবার বললো, তাঁকে তাঁর উম্মাতের এক হাজার জনের সাথে ওজন কর। আমাকে এক হাজার জনের সাথে ওজন করলে আমি এবারও ওজনে তাদের চাইতে বেশি হলাম। অতপর সে বললো, রেখে দাও, আল্লাহর কসম, তাঁকে যদি তাঁর সমগ্র উম্মাতের সাথেও ওজন করা হয় তাহলেও তিনিই তাঁদের সবার চাইতে ওজনে বেশী হবেন।’ (সুবহানাল্লাহ)
বক্ষবিদারণ ছিল রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দুনিয়ার যাবতীয় কাজ-কর্ম থেকে কুলুষমুক্ত রাখার একটি অন্যতম উপায়। কেননা তিনি দুনিয়াতে এসেছেন বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী হয়ে। সুতরাং রবিউল আউয়াল মাসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভাগমন আলোচনা, আদর্শ প্রচার, প্রসার এবং ব্যক্তি জীবনে বাস্তবায়ন হোক ঈমানের দাবি। আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদীকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আলোক উজ্জ্বলময় জীবনী প্রচার এবং এ থেকে উত্তম শিক্ষা লাভের সৌভাগ্য দান করুন। আমিন।

এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।