বিচার বিভাগ জাতীয় উন্নয়নের মাইলফলক : রাষ্ট্রপতি


প্রকাশিত: ১০:৩৩ এএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বিচার বিভাগ জাতীয় উন্নয়নের মাইলফলক। জনগণের প্রত্যাশা বিচার বিভাগের কাছে বেশি। বিচার কাজের মাধ্যেমে বিচারকগণকে জনগণের সে প্রত্যাশা সমুন্নত রাখতে হবে। শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলন-২০১৫’- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ন্যায় বিচার প্রাপ্তি মানুষের মৌলিক অধিকার। কিন্তু নানা কারণে জনগণ সে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে। মানুষের শেষ ভরসার স্থল বিচার বিভাগ। তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মামলা-মোকাদ্দমার যুক্তি-তর্ক সম্পন্নের বিষয়ে তাগিদ দেন তিনি।

বিচার বিভাগকে শাসন বিভাগের অপরিহার্য কাঠামো উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিচারকার্যের মাধ্যমে বিচার বিভাগ গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিচ্ছে। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বিচারকগণ জাতির বিবেক। তাই সংবিধান, আইনের প্রতি অবিচল আস্থা, দেশ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে বিচারকরা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হচ্ছে- বিলম্বে বিচার ও মামলা জট। এসব সমস্যার সমাধান করতে হবে। ন্যায়বিচার প্রাপ্তি মানুষের মৌলিক অধিকার। দায়িত্বপালনে নিরপেক্ষ থেকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচারকরা সর্বোচ্চ আন্তরিক হবেন, জনগণ তা প্রত্যাশা করে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, একটি আবেদনের শুনানি সমাপ্তের পর বা মোকাদ্দমার যুক্তিতর্ক শুনানির পর আদেশ লাভে যাতে বিলম্ব না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এতে বিচার বিভাগের প্রতি যেমন জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে, তেমনি বিচারকরাও বিবেকের নিকট স্বচ্ছ থাকবেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জাস্টিস ডিলেট, জাস্টিস ডিনাইড’- এ নীতি বাক্য আমাদের বিচারব্যবস্থায় প্রচলিত থাকুক আমরা তা আর চাই না।

বিচারক ও মামলার সংখ্যায় ভারসাম্য আনার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিচার কার্যে কাঙ্ক্ষিত গতি আনয়নের জন্য পর্যাপ্ত বিচার কক্ষ, বিচারকের শূন্যপদে নিয়োগ এবং বিচারক ও মোকদ্দমার সংখ্যায় যুক্তিসঙ্গত ভারসাম্য রক্ষা করা আবশ্যক।

তিনি বলেন, মামলা পরিচালনায় সম্মানিত আইনজীবীদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তাই অহেতুক বিলম্ব বা অত্যাধিক আর্থিক চাপের কারণে বিচার কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় এবং বিচারপ্রার্থীরা যাতে ন্যায় বিচার পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের সদস্য জ্যেষ্ঠ জেলা জজ মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সুপ্রিকোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহের সচিবগণ। দেশের অধঃস্তন আদালতের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা এ সম্মেলনে অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে ২০০৫ সালে ১৪ নভেম্বর বোমা হামলায় নির্মমভাবে নিহত ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ জগন্নাথ পাঁড়ে এবং মো. সোহেল আহমেদের পরিবারকে সুপ্রিমকোর্টের পক্ষ থেকে অনুদান দেয়া হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নিহত দু্ই বিচারকের স্ত্রীর হাতে দুই লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র তুলে দেন।

এফএইচ/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।