জলবায়ু আলোচনায় নাগরিক সমাজকে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫৭ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২১

যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনে দেশের স্বার্থরক্ষা কৌশলকে আরও জোরদার করতে একটি কার্যকর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজ প্রতিনিধিরা। জলবায়ু আলোচনায় কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য নাগরিক সমাজকে সুযোগ দেওয়ার সুপারিশও করেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) ‘কপ-২৬: সরকারি অবস্থান এবং নাগরিক সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি’ শিরোনামের এক ভার্চুয়াল সেমিনারে এ সুপারিশ করেন বক্তারা।

সেমিনারে উল্লেখ করা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অন্যতম বিপদাপন্ন দেশ হিসেবে প্যারিস চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের শক্তিশালী অবস্থান নেওয়া উচিৎ। যাতে উন্নত অভিযোজনের জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা যায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়-ক্ষতির যথাযথ ক্ষতিপূরণ পাওয়া সম্ভব হয়।

কোস্ট ফাউন্ডেশন, অ্যান অরগানাইজেশন ফর স্যোশিও ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (এওএসইডি), সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি), কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ (সিডিপি), কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (ক্লিন) এবং ইকুইটি অ্যান্ড জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশে (ইকুইটিবিডি) যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

জাতীয় সংসদ সদস্য এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক। অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মীর্জা শওকত, সিপিআরডির মো. শামসুদ্দোহা, কানসা-বিডির কো-চেয়ার রাবেয় বেগম, সিডিডির জাহাঙ্গীর হোসেন মাসুম, লিডার’র মোহন কুমার মন্ডল, এওএসইডির শামীম আরেফিন এবং ক্লিনের হাসান মেহেদী। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইকুইটিবিডির সৈয়দ আমিনুল হক।

সেমিনারে সৈয়দ আমিনুল হক বলেন, কপ-২৬ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নতুন জমা দেওয়া ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ডেড কন্ট্রিবিউশন (এনডিসি), ক্ষয়-ক্ষতি বিষয়ক বিশেষ প্রক্রিয়া নির্ধারণ এবং গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডে (জিসিএফ) ১০০ বিলিয়ন ডলার জোগান দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে। অন্যতম বিপদাপন্ন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারকে দেশের স্বার্থ রক্ষায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নিয়মিত ক্ষয়-ক্ষতি কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

সৈয়দ আমিনুল হক সরকারি প্রতিনিধিদলের কাছে এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে- বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার জন্য উন্নত এবং প্রধান দূষণকারী দেশগুলির অবদান এবং অর্থনৈতিক আয়তনের ভিত্তিতে এনডিসির পুনর্বিবেচনা করা, উন্নত দেশগুলিকে অবশ্যই জিসিএফ -এর বাইরে অতিরিক্ত তহবিল নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ক্ষয়-ক্ষতি হ্রাস করা যায় এবং পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো সম্ভব হয়। এছাড়া জিসিএফকে তার অর্থায়ন প্রক্রিয়াকে সহজ করতে হবে, যাতে প্রস্তুতিমূলক কর্মসূচি ও প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি ও বাস্তবায়নের উভয় ক্ষেত্রেই সহজে অর্থ পাওয়া যায়। ইউএনএফসিসিসি ক্লাইমেট টেকনোলজি সেন্টার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অতি বিপদাপন্ন দেশগুলোর উপযুক্ত প্রযুক্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে প্রশমন এবং অভিযোজন উভয় ক্ষেত্রেই দেশগুলো সক্ষমতা বাড়াতে পারে।

অনুষ্ঠানে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রবাহকে বাংলাদেশের অনুকূলে নিয়ে আসার চেষ্টা অবশ্যই থাকবে। এর বাইরেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী উন্নত দেশগুলিকে বাস্তবসম্মতভাবে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ হ্রস লক্ষ্যমাত্রা মেনে চলতে উৎসাহিত করবেন এবং জিসিএফ তহবিলে ১০০ বিলিয়ন জোগান দেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করবেন।

মির্জা সাওকত বলেন, আমরা কপ ২৬ -এর জন্য একটি অবস্থান তৈরি করেছি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে বিষয়গুলো নিয়ে সমন্বয় প্রক্রিয়া চলছে। সরকারের অবস্থান প্রাথমিকভাবে অর্থ ও প্রযুক্তির ওপর জোর দেবে এবং আমরা চেষ্টা করবো জিসিএফ তহবিলে অভিযোজনের জণ্য ৫০ শতাংশ বরাদ্দ রাখার ব্যাপারে একটি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে।

সেমিনারে অন্যান্য বক্তারা কপ-২৬ এর জন্য দেশের অবস্থান তৈরিতে নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ থাকা উচিৎ বলে অভিমত প্রকাশ করেন।

এসএম/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।