পৌষের শীত উপেক্ষা করে চলছে জমজমাট প্রচারণা
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলেছে জমজমাট নির্বাচনী প্রচারণা। পৌষের শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা প্রতিটি ভোটারদের বাসা-বাড়িতে গিয়ে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। আর ভোটাররা বরাবরের মতোই বলেছেন দেখে শুনে যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবেন।
বড় দুই রাজনৈতিক দলের হেভিওয়েট রাজনীতিবিদ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম কমিটির সদস্য সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নির্বাচনী এলাকা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা।
সে উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার নির্বাচনে এবারও আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রীর ছোট ভোট ভাই বর্তমান মেয়র আবদুল কাদের (মির্জা)। অপরদিকে, বিএপি থেকে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন বসুরহাট পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র কামাল উদ্দিন চৌধুরী। উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন গনসংযোগ করে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রার্থীরা নিজের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন।
পৌর এলাকায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাত বছরে বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি রাজনৈতিক সহাবস্থানসহ ভবিষ্যত বিভিন্ন গৃহিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য আবার ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছেন বর্তমান মেয়র আবদুল কাদের (মির্জা)।
পাশাপাশি বিএনপির প্রার্থী ও সাবেক মেয়র কামাল উদ্দিন চৌধুরীও বসে নেই। প্রচণ্ড কুয়াশা আর শীতের মধ্যে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গণসংযোগ করছেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।
মেয়র প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরী গতবারের প্রচারণার চিত্র তুলে ধরে জানান, নির্বাচনের পরিবেশ ভালো ছিল। কিন্তুু ভোটের দুই দিন আগে সব পাল্টে যায়। এবার তিনি সেরকম কিছু হওয়ার আশঙ্কা করছেন। তিনি নির্বাচিত হলে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়াসহ মাদক মুক্ত পৌর এলাকাসহ এলাকার বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করবেন। এছাড়া তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে শতভাগ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
মোশারফ হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে ভোট করছেন। ২০ দলীয় জোটের শরীক দল জামায়াত দলীয় প্রতীকে সরসরি ভোট না করলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করায় ভোটারদের মাঝে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এদিকে এ পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থীর পাশাপাশি উপজেলা জামায়াতের আমির মোশারফ হোসেন স্বতন্ত্রভাবে মেয়র পদে ভোট করছেন। তার প্রার্থী হওয়াটি বিএনপির জন্য একটু বেকায়দায় বলে মনে করছেন ভোটাররা।
তবে মোশারফ হোসেন জানান, এটি একটি স্থানীয় নির্বাচন। এখনো যে কেউই ভোটে প্রার্থী হতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, বিগত সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেয়া মেয়র প্রার্থী মাঠে ছিলেন না।
মেয়রদের পাশাপাশি বসে নেই কাউন্সিলররা। সংরক্ষিত কাউন্সিরর ও সাধারণ কাউন্সিলররা ও যার ওয়ার্ডের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে তা সমাধানের বিভিন্ন অঙ্গীকার দিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন ভোটারদের কাছে গিয়ে।
এছাড়া জাসদ থেকে মেয়র পদে প্রার্থী মোকারম বিল্লাহ তার দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে ভোটারদের সাথে আলাপাকালে তারা জানান, ভোট দানের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার সঙ্গে তারা দেখে শুনে যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দিবেন।
প্রথম শ্রেণির বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে চার মেয়রের পাশাপাশি সংরক্ষিত কাউন্সিরর ৬ এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৯ জন প্রার্থী ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এ পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার ৯০৮ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৬০২ এবং নারী ভোটার ৮ হাজার ৩০৬ জন।
মিজানুর রহমান/এমজেড/এমএস