দিনের রাস্তায় জ্বলে হেডলাইট


প্রকাশিত: ০৯:১৭ এএম, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫

হিমালয় কন্যা খ্যাত পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। ঘন কুয়াশার কারণে দিনে যানবাহন চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। কনকনে শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রিকশা-ভ্যান চালকসহ খেটে খাওয়া মানুষ। তারা পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন যাপন করছেন।

হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ডায়রিয়াসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শীত মোকাবেলায় এখনো সরকারি বা বেসরকারিভাবে তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে সকাল থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকে আকাশ। সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাস। দিনের বেলায় কখনো কখনো সূর্যের দেখা মিললেও তাপ ছড়ানোর আগেই আবারও ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় সূর্য। ঘন কুয়াশায় যানচলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহ চলাচল করছে। রাতভর বৃষ্টির মত তুষার ঝড়ছে।

রিকশা, ভ্যান আর টমটম চালকদের দৈনন্দিন আয় কমে গেছে। ঠান্ডার কারণে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া যাত্রীরা রিকশা-ভ্যানে উঠছেন না। গরীব ও দুঃস্থ মানুষজন খরকুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। জেলায় কোনো আবহাওয়া অফিস না থাকায় তাপমাত্রার সঠিক পরিমাপ জানা যায়নি। তবে স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থার তথ্য মতে বর্তমানে এখানে রাতে ৬ থেকে ৭ এবং দিনের বেলা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠানামা করছে।

এদিকে, বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য বাড়তি সতর্কতা নিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। সর্দি-কাশি লেগে থাকছে। হাসপাতালে শীত ও শীতজনিত রোগে আক্রান্তদের ভীর বাড়ছে। গত তিনদিনে সরকারি হাসপাতাল ও শহরের বেসরকারী বিভিন্ন ক্লিনিকে শতাধীক শিশু ভর্তি হয়েছে শীতজনিত রোগের কারণে। এদের অধিকাংশ ডায়রিয়া, এজমা, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত।

অন্যদিকে, জেলার দুই লাখ গরীব ও দুঃস্থ মানুষকে শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচাতে সরকারি বা বেসরকারিভাবে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। এখনি শীতকাতর মানুষের পাশে দাঁড়াতে না পারলে তীব্র শীতে দুঃস্থদের দুর্ভোগ আরও চরমে পৌঁছাবে।

শহরের রামের ডাংগা মহল্লার রিকশা চালক সপিয়ার রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ঠান্ডার কারণে যাত্রীরা রিকশায় উঠতে চায় না। আগে আধাবেলা রিকশা চালিয়ে দেড় থেকে দুইশ টাকা পর্যন্ত আয় হতো। বর্তমানে সারাদিন মাত্র ৫০ থেকে ৭০ টাকা আয় হয়। পরিবার নিয়ে বড়ই কষ্টে আছি।

Light

পঞ্চগড় নুরুল আলা নুর কামিল মাদ্রসার অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, উত্তরের এই সীমান্ত জেলায় বরাবরে অন্য যেকোনো এলাকার তুলনায় বেশি শীত অনুভূত হয়। কিন্তু বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহায়তার শীতবস্ত্র এলাকায় আসে শীত মৌসুমের শেষের দিকে। তখন সেই সহায়তায় উপযুক্ত কাজ হয় না। এজন্য সঠিক সময়ে শীতবস্ত্র নিয়ে শীত কাতর এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান করছি।
 
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, তীব্র শীতের কারণে সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসা ও পরামর্শ দিচ্ছি। সদর হাসপাতলে বর্তমান ভর্তিকৃত রোগীদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের ঠান্ডা এবং বাশি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে শীতকালীন ফলমূল ও সবজি খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কারণ এই মৌসুমের শীতকালীন সবজি ও ফলমূল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।