শীতে ঝিনাইদহে রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা
ঝিনাইদহের প্রকৃতিতে এসে গেছে শীতের আমেজ। সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই ব্যস্ত গাছিরা দা, ঠুঙি ও দড়ি নিয়ে ছুটছেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
শীতকাল গ্রামবাংলায় নিয়ে আসে নানা রকম সুস্বাদু খাবারের সমাহার। বিভিন্ন রকমের খাবারের মধ্যে শীতের প্রধান অনুষঙ্গ সুস্বাদু খেজুরের রস। সে রসে তৈরি পাটালি গুড় আর শীতের রকমারি পিঠাপুলি সবার মন ভরিয়ে দেয়। লোভনীয় খেজুর রসের যোগান দিতে তাই এখন থেকেই ব্যস্ত গাছিরা। চলছে খেজুর গাছ চাঁছা-ছেলার কাজ। গ্রামে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দল বেঁধে গাছিরা খেজুর গাছ পরিস্কারের কাজ করছে।
জেলার আগমুন্দিয়া গ্রামের গাছি মীর হোসেন জাগো নিউজকে জানান, তিনি এবার সব মিলিয়ে ১৫০টি খেজুর গাছ কেটেছেন। প্রতিদিন ১৫০টি খেজুর গাছ থেকে ২০ থেকে ২৫ কেজি গুড় সংগ্রহ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মীর হোসেন আরও জানান, তিনি সাধারণ খেজুরের গুড় থেকে পাটালি তৈরি করেন। যার চাহিদা অনেক এবং বেশি দামে বিক্রি করা যায়। যত্ন সহকারে কাটলে একটি খেজুর গাছ থেকে মৗেসুমে প্রায় ১০ থেকে ১৫ কেজি গুড় উৎপাদন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, শীত আসা মাত্রই আমরা খেজুর গাছ তোলার জন্য সকাল-সন্ধ্যা লেগে আছি। খেজুর গাছ আগের থেকে অনেক কমে গেছে। আগের মতো এখন বেশি রস সংগ্রহ হচ্ছে না।
কমলাবাড়ি গ্রামের আমিনুল নামের এক গাছি জাগো নিউজকে জানান, জেলার গ্রামীণ মেঠোপথের ধারেই রয়েছে সারি সারি খেঁজুর গাছ। তাই বিকেলে গ্রামের যে পথেই হাঁটা যায়, চোখে পড়বে খেজুর গাছ ঝোড়ার অপূর্ব দৃশ্য। গাছের ডাল ঝোড়া, গাছের মাথা ছেনি অথবা ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে কয়েক দফা চাঁছ দেয়ার কাজ চলছে।
রস জ্বালানো ভাটি, জ্বালানি ও রস সংগ্রহের কাজ শেষের দিকে। আশ্বিনের শুরু থেকেই তারা খেজুর গাছ তোলা ও পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এটাই উপযুক্ত সময়। মাঘের ‘বাঘা শীতে’ গুড় বিক্রির মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ প্রক্রিয়া।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ কৃষি অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শাহ মো. আকরামুল হক জাগো নিউজকে জানান, কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, কালীগঞ্জ, শৈলকুপা ও হরিণাকুণ্ড উপজেলায় সরকারি হিসেবে প্রায় ৬৫ হাজার ছোট বড় খেজুর গাছ রয়েছে। প্রতি বছর শীতের শুরুতে গাছিরা এসব খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করেন। আসন্ন নবান্নতেও এই খেঁজুর গুড় ও রস নতুন মাত্রা আনবে গ্রামের গৃহস্থদের রসুইখানায়।
এমজেড/এমএস