শিক্ষার্থীদের খাতায় ভারতীয় সিরিয়ালের ছবি!
পোশাকের পর এবার ভারতীয় বিভিন্ন টিভি সিরিয়ালের প্রভাব পড়ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অনুশীলনের খাতায়। উত্তরাঞ্জলের বিভিন্ন স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে ভারতীয় টিভি সিরিয়ালের নায়ক-নায়িকাদের রঙিন ছবিযুক্ত অনুশীলন খাতার মলাট (কাভার পেজ)।
সে কারণে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার আলোচনা বাদ দিয়ে স্টার জলসা, জি বাংলারসহ বিভিন্ন সিরিয়ালের পর্বের আলোচনা নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকছে। আবার অনেকে অনুশীলন খাতায় থাকা কিরণমালা, ইস্টিকুটুম, ঠিক যেন লাভ স্টোরি, চোখের তারা তুই, বধুবরণ, পাখি নাটকের নায়ক-নায়িকাদের ছবি নিয়ে নানা তর্ক-বির্তকে লিপ্ত থাকছে।
এছাড়াও উত্তরাঞ্চলের হাট-বাজার এবং রাস্তার মোড়ে গড়ে ওঠা বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, ভারতীয় টিভি চ্যানেল স্টার জলসা, জি বাংলাসহ বিভিন্ন সিরিয়ালের নায়ক-নায়িকাদের ছবি সম্বলিত অনুশীলন খাতা বিক্রি করছে। এসব দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাই এসব ছবিযুক্ত অনুশীলন খাতা চেয়ে নেয়। আর এসব খাতার চাহিদাও ব্যাপক। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই ব্যবসার খাতিরে এ ধরনের অনুশীলন খাতা বিক্রি করতে হয়। দামের দিক থেকে অনুশীলনের এসব খাতা প্রতিটি ১০ থেকে ৬০ টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হয়।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে একজন বিক্রেতা বলেন, এসব খাতা শিশুদের কাছে বিক্রি করতে খারাপ লাগে। কিন্তু বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
কথা হয় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আলফা আক্তার, মৌসুমি, রাধা রানী, সুজাতা, তৃতীয় শ্রেণির মিলন, আরাফাত, জাকিয়া ও মরমরির সঙ্গে। তারা জানায়, বন্ধুরা এসব খাতা ব্যবহার করে তাই আমরাও করি।
দিনাজপুর শহরের রাজবাটি জুবলী স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসাইন বাবলু জানান, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার অপপ্রয়াস হিসেবে বিদেশি নায়ক নায়িকা এবং ভারতীয় টিভি চ্যানেল স্টার জলসা, জি বাংলাসহ বিভিন্ন সিরিয়ালের নায়ক-নায়িকাদের ছবি সম্বলিত খাতা বিক্রি করা হচ্ছে। এখনই এসব বন্ধ করা জরুরি।
তিনি বলেন, বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের মধ্যে এটিও একটি কু-রুচি পূর্ণ কাজ এবং অপরাধমূলক কাজ। তাই অন্যান্য অপরাধ প্রবণতাকে রোধ করার জন্য যেভাবে মোবাইল বা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে সেভাবেই প্রস্তুতকারী এবং বিক্রেতাদের আটক করে সাজা ও জরিমানা করা উচিত। যাতে করে এই খাতা উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বাজার থেকে খাতাগুলো তুলে নেয়ার দাবি জানান।
এমদাদুল হক মিলন/এসএস/এমএস