রিং আইডির পরিচালক সাইফুল গ্রেফতার
অডিও শুনুন
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রিং আইডির পরিচালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শনিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শুক্রবার রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। রিং আইডিতে বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন- এমন অভিযোগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একজনের করা মামলায় সাইফুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, রিং আইডিতে বিনিয়োগ করে প্রতারিত একজন ভুক্তভোগী ভাটারা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। রিং আইডির ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই ভুক্তভোগী। শিডিউলভুক্ত হওয়ায় এ মামলাটি সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। তদন্তের ধারাবাহিকতায় সাইবার পুলিশ সেন্টার মামলার অন্যতম অভিযুক্ত মো. সাইফুল ইসলাম গুলশান থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
তাদের এ কার্যক্রমের সঙ্গে কারা কীভাবে জড়িত ও এ বিপুল পরিমাণ অর্থ তারা কোথায়, কীভাবে সংরক্ষণ করছেন তা বিস্তারিত জানতে পাঁচদিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।
সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, রিং আইডি প্রাথমিকভাবে একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে তারা বিভিন্ন সার্ভিস যোগ করে জনগণের কাছে থেকে বিপুল পরিমাণ আমানত সংগ্রহ করে। এসব সার্ভিসের মধ্যে রয়েছে বৈদেশিক বিনিয়োগ, কমিউনিটি জবসসহ বিভিন্ন সার্ভিস, যার আড়ালে এ আমানত সংগ্রহের কার্যক্রম পরিচালনা করে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিপুল পরিমাণ জনগণ এ খাতে বিনিয়োগ করে। এর আগেও তাদের করোনাকালীন ডোনেশনের মাধ্যমে জনগণের কাছে থেকে অর্থ সংগ্রহের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সন্দেহ পোষণ করা হয়েছিল। বর্তমানে সন্দেহের তালিকায় থাকা বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটের মতো তারাও অস্বাভাবিক ডিসকাউন্টে বিভিন্ন প্রোডাক্ট বিক্রি ও ক্রেতাদের কাছে থেকে ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে লেনদেন পরিচালনা করছিল।
তিনি আরও বলেন, তাদের এসব সন্দেহজনক কার্যক্রম লক্ষ্য করে বেশ কিছুদিন আগে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার থেকে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) অনুসন্ধানের জন্য একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। বিএফআইইউ ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে তাদের অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে। এছাড়াও রিং আইডির ইস্যুতে সাইবার পুলিশ সেন্টারে মানিলন্ডারিং বিষয়ে একটি অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় সাইবার পুলিশ সেন্টার রিং আইডির অবৈধ কার্যক্রম সম্পর্কে বিপুল পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, কমিউনিটি জবস খাতে অ্যাডভারটাইজমেন্ট দেখিয়ে উপার্জনের কথা বলেই এ জনগণের কাছে থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। কেবল কমিউনিটি জবস খাত থেকেই গত মে মাসে ২৩ কোটি লাখ ৯৪ টাকা, জুন মাসে ১০৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা ও জুলাই মাসে ৭৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে সংগ্রহ করেছে।
রিং আইডি অবৈধভাবে দেশের বাইরে টাকা পাচার করতে না পারে সে কারণে ইতোমধ্যেই তাদের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
টিটি/বিএ/এমএস