সৌদিতে পাচার নারীর বাঁচার আকুতি, ৪ পাচারকারী গ্রেফতার
সৌদি আরবে পাচারের শিকার হয়েছেন এক নারী। সেখানে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। ওই নারী বাঁচার আকুতি জানানোর মাস তিনেক পর তার স্বামীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মানবপাচারকারী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গ্রেফতাকৃতররা হলেন- ইফতি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক রুবেল, আল-জাহাঙ্গীর এস্টাবলিশমেন্ট নামের আরেক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মুবারক এবং তাদের সহযোগী আক্কাস ও তাহের। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর পল্টন ও রমনা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব-৩ এর একটি দল।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র্যাব-৩ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ফাঁদ, যেমন বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ জনগণের সরলতার সুযোগ নিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সৌদি আরবে পাচারের শিকার ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-৩ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাজধানীর পল্টন ও রমনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার আক্কাস বেপারী ভিকটিমের স্বামীর পূর্ব পরিচিত। তিনি পাচারের শিকার নারীকে মধ্যপ্রাচ্যে ২৫ হাজার টাকা বেতনে হাসপাতালে আয়ার চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রেফতার মোবারক ও তাহেরের কাছে নিয়ে যান।
তারা ইফতি ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক রুবেলের সহযোগিতায় রিক্রুটিং লাইসেন্স ব্যবহার করে ভিকটিমকে চলতি বছরের জুন মাসে সৌদি আরবে পাঠায়। এরপর আসামিরা ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করেননি। ভুক্তভোগী বিদেশে গিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হলে স্বামীকে বিষয়টি জানান।
ভুক্তভোগীর স্বামীর মাধ্যমে পাচারে জড়িতরা নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পারলেও সমস্যা সমাধানের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি উল্লেখ করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ভুক্তভোগীর স্বামী জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধারের জন্য অভিযোগ করেন। তবে অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য পাচারকারীরা ভুক্তভোগী পরিবারকে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ও পাচারের শিকার নারীকে দেশে ফিরিয়ে আনার খরচ বাবদ চার লাখ টাকা দাবি করেন।
এ অবস্থায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী নিরুপায় হয়ে স্ত্রীকে উদ্ধারের জন্য র্যাবের কাছে গত সপ্তাহে অভিযোগ করেন ও পাচারে জড়িতদের নামে পল্টন মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।
টিটি/ইএ/এএসএম