নিবন্ধন না করায় কেন্দ্র থেকে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে সারাদেশে গণটিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে একদিনে ৭৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে টিকার জন্য নিবন্ধন না করায় অনেককে কেন্দ্রে এসেও টিকা না পেয়ে ফেরত যেতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ধোলাইপাড়-যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৯টা থেকে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে তেমন ভিড় নেই, লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকার জন্য অপেক্ষা নেই। যারা আসছেন সঙ্গে সঙ্গে টিকা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। তবে টিকা পেতে নিবন্ধন করেননি, এমন ব্যক্তিদের টিকা না পেয়ে ঘরে ফিরতে হচ্ছে।
টিকাকেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেকেই টিকার জন্য নিবন্ধন না করে কেন্দ্রে আসছেন। তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। কেউ কেউ শুধুমাত্র এনআইডি নিয়ে এসেছেন, তাদেরও ফিরে যেতে হচ্ছে।
সায়দাবাদের ৫০নং ওয়ার্ডের চন্দনকোঠা কমিউনিটি সেন্টারে টিকা নিতে আসা পরিচ্ছন্নকর্মী সখিনা খাতুন সকাল থেকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছেন টিকার জন্য। কেন্দ্রের ভেতর পৌঁছানোর পর তাকে জানানো হয়, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া টিকা দেয়া হবে না। পরে অনেকটা আক্ষেপ নিয়েই ফিরেছেন তিনি।
এসময় সখিনা খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা তো জানিনা কিভাবে টিকা দিতে হয়। রেজিস্ট্রেশন করিনি, আইডি কার্ড নিয়ে আসছি। কিন্তু ওনারা বলছেন, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া টিকা দেবেন না। অনেক অপেক্ষা করে লাইনে দাঁড়ালাম, টিকা নিতে পারলাম না।
ওই সেন্টারে আরেক নারী সেলিনা বেগম জানান, আমারে একজন জানাইলো কার্ড দিয়ে টিকা দিতাছে। সকাল থেইকা দাঁড়াইয়া আছি, টিকা লইতে পারি নাই। কইতাছে, টিকার লইতে কার্ড লাগবো। আমরা তো এতোসব বুঝি না, কী লাগবো না লাগবো। এতোক্ষণ দাঁড়াইয়া এহন ফিইরা যাইতাছি।
ঢাকা দক্ষিণের ৬১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জুম্মন মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, যাদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা আছে, তাদেরই শুধুমাত্র টিকা দেয়া হচ্ছে। সেজন্য অনেকে টিকা দিতে পারছেন না। আমরা সারাদিনে সাড়ে তিনশ টিকা দেবো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে করোনাভাইরাসের গণটিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আজ ৭৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার কথা রয়েছে।
চন্দনকোঠা কমিউনিটি সেন্টারের টিকাদান কেন্দ্রের সুপারভাইজার উন্নতি রানি পাল জাগো নিউজকে জানান, সকাল ৯টা থেকে আমরা টিকা দেওয়া শুরু করেছি। তবে ভিড় কিছুটা কম। ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে মাইকিং করে মানুষকে টিকা কেন্দ্রে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। মূলত যাদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা আছে, তাদেরই টিকা দেওয়া হচ্ছে। সে কারণেই ভিড় কম।
গত রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, যারা নিবন্ধন করেছেন তাদের কাছে খুদে বার্তা পাঠানো হবে। খুদে বার্তা না পেলেও টিকা নিবন্ধনের কার্ড সঙ্গে নিয়ে টিকাকেন্দ্রে গেলেই টিকা দিতে পারবেন। যারা নিবন্ধন করেননি জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে গেলে তারাও টিকা নিতে পারবেন।
২৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে দিনব্যাপী পরিচালিত এ ক্যাম্পেইনে নিবন্ধনকারী তো বটেই, নিবন্ধন করেননি এমন জনগোষ্ঠীকেও টিকার আওতায় আনা হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
আজ রাজধানীসহ সারাদেশের ইউনিয়ন (প্রতি ইউনিয়নে তিনটি টিকাদান কেন্দ্র), পৌরসভা (একটি টিকাদান কেন্দ্র) এবং সিটি করপোরেশন এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে (তিনটি করে টিকাদান কেন্দ্র) টিকাদান কেন্দ্র চালু রয়েছে। কর্মসূচি সফল করতে ৩২ হাজার টিকাদানকারী এবং ৪৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবীসহ মোট ৮০ হাজার মানুষ সম্পৃক্ত রয়েছেন। রাজধানীসহ সারাদেশে চার হাজার ৬০০টি ইউনিয়ন, এক হাজার ৫৪টি পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪৩৩টি ওয়ার্ডে স্থাপন করা টিকাকেন্দ্র থেকে এ গণটিকাদান কর্মযজ্ঞ চলছে।
আইএইচআর/এমকেআর/জিকেএস