জাতীয় জাদুঘরে চলে না এসি, গরমে হাঁসফাঁস দর্শনার্থীরা
রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে ঘুরতে এসে ফিরে যান অনেক দর্শনার্থী। টিকিট কাটতে না পারায় তাদের এই অবস্থা। আবার যারা জাদুঘরে প্রবেশ করতে পারছিলেন তারা গরমে অতিষ্ঠ। এসি নষ্ট থাকায় এই ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে দর্শনার্থীদের।
শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় জাদুঘরের সামনে গেলে দেখা হয় রাজধানীর খিলক্ষেতের নামাপাড়া এলাকার বাসিন্দা আহসান কবিরের সঙ্গে। ছুটির দিনে স্ত্রী ও স্কুলপড়ুয়া দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন তিনি।
প্রবেশমুখে টিকিট কাউন্টার বন্ধ দেখে নিরাপত্তারক্ষীদের জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কারণে সরাসরি কোনো টিকিট বিক্রি হয় না। প্রতিদিন অনলাইনের মাধ্যমে ৬০০ জন এবং শুক্রবার ছুটির দিন এক হাজার দর্শনার্থীর জন্য টিকিট বিক্রি হয়।
টিকিট না পেয়ে ফিরে যাওয়ার আগে এ প্রতিবেদককে আহসান কবির বলেন, করোনার কারণে মাসের পর মাস ঘরবন্দি থেকে শিশুরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। বর্তমানে ঢাকা শহরে শিশুদের নিয়ে ঘুরে দেখানোর খুব বেশি বিনোদনের জায়গা নেই। আগে শাহবাগের শিশুপার্ক ছিল তাও এখন বন্ধ।
করোনা সংক্রমণ কমে এসেছে মন্তব্য করে তিনি অনলাইনের পাশাপাশি সরাসরি দর্শনার্থীদের কাছে টিকিট বিক্রির অনুরোধ জানান।
এ বক্তব্য শুধু আহসান কবিরের একার নয়, শুক্রবার ছুটির দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসে ফিরে যাওয়া অসংখ্য দর্শনার্থীর।
তবে জাদুঘরে প্রবেশ করার আগে নিশ্চিত করতে দেখা যায় স্বাস্থ্যবিধি। ছোটবড় সবাইকে মাস্ক পরে, স্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক টানেল দিয়ে প্রবেশ করতে হয়। এছাড়া মাপা হয় তাপমাত্রা। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত হলেও জাদুঘরের ভেতরে প্রবেশ করে গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকেন দর্শনার্থীরা।
এ বিষয়ে রাজধানীর কলাবাগানের বাসিন্দা হাসানুজ্জামান বলেন, জাতীয় জাদুঘরের মোট ৪৫ গ্যালারিতে শত শত দর্শনীয় নিদর্শন রয়েছে। তবে স্বস্তি নিয়ে ঘুরে দেখা অসম্ভব। বিশাল আয়তনের প্রতিটি গ্যালারিতে একাধিক এয়ারকন্ডিশন থাকলেও অধিকাংশই বিকল। ফলে গরমে অতিষ্ঠ দর্শনার্থীরা।
তিনি বলেন, ঘুরতে ঘুরতে সিলিং বা টেবিল ফ্যান দেখলে দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নেন দর্শনার্থী। জাতীয় জাদুঘরের মতো প্রতিষ্ঠানে এমন দুরবস্থা কীভাবে চলছে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেন হাসানুজ্জামান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাদুঘরের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, দোতলায় ২২, তিনতলায় ১৮ ও চতুর্থ তলায় পাঁচটিসহ মোট ৪৫টি গ্যালারি রয়েছে। এসব গ্যালারির শতাধিক এসির সিংহভাগই বিকল। গরমে শুধু দর্শনার্থীই নয়, তারা নিজেরাও দায়িত্বপালনকালে অস্বস্তিবোধ করেন। করোনার কারণে সব সময় মাস্ক পরে থাকার পাশাপাশি গরমের কারণে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
গত এপ্রিলে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় অন্যান্য সবকিছুর সঙ্গে জাতীয় জাদুঘরও বন্ধ করে দেয় সরকার। এরপর ১১ আগস্ট থেকে তুলে দেওয়া হয় বিধিনিষেধ। সংক্রমণ কিছুটা কমে এলে ২৩ আগস্ট থেকে খুলে দেওয়া হয় জাদুঘর।
এখন জাতীয় জাদুঘর প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পরিদর্শন করা যায়। সাপ্তাহিক ছুটি বৃহস্পতিবার।
জেডএইচ/এএসএম