স্বাচিপের সিলেকশন ইলেকশন আলোচনা ছিল সর্বত্র


প্রকাশিত: ১২:৩৫ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫

দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় পর অনুষ্ঠিত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) চতুর্থ জাতীয় সম্মেলনে নতুন নেতৃত্বের শীর্ষ পদে কারা আসছেন তা নিয়ে স্বাস্থ্য সেক্টরে কর্মরত চিকিৎসকদের আলোচনা ছিল সরগরম।

নতুন নেতৃত্ব কোন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হবে, ইলেকশন নাকি সিলেকশনের মাধ্যমে হবে তা নিয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনুসারী এ সংগঠনটির চিকিৎসক নেতারা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছিলেন।

একটি পক্ষ সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্ধারণের পক্ষে থাকলেও আরেকটি পক্ষ হালনাগাদ ভোটার তালিকা ক্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করে নির্বাচনের বিরোধীতা করে। এ বছর স্বাচিপের ভোটার সংখ্যা ছিল ১২ হাজারেরও বেশি।

শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছানুসারে বিএমএ ও স্বাচিপের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলানকে সভাপতি ও বিএমএর যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজকে মহাসচিব করে স্বাচিপের নতুন কমিটি গঠিত হয়।

সভাপতি ও মহাসচিব ছাড়াও সহ-সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ ও যুগ্ম মহাসচিবসহ কয়েকজন শীর্ষ নেতার নামও সিলেকশন করেন প্রধানমন্ত্রী। কমিটির অবশিষ্ট নেতা নির্বাচিত সভাপতি ও মহাসচিবসহ অন্যান্যরা নির্ধারণ করবেন বলেও নির্দেশনা দেন তিনি।

উল্লেখ্য, এবারের সম্মেলনে স্বাচিপের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা ১০১ থেকে ১৫১ করার সিদ্ধান্ত হয়।

১৩ নভেম্বর স্বাচিপের কাউন্সিল অধিবেশন হলেও তার মাসখানেক আগে থেকেই বিভিন্ন পদপদবি পেতে প্রবীণদের পাশাপাশি নবীন চিকিৎসক নেতারা মাঠে নামেন।

এ কাউন্সিলকে সামনে রেখে সভাপতি ও মহাসচিব পদে দেড় ডজনেরও বেশি নেতার নাম উঠে আসে। সভাপতি হিসেবে ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ডা. ইকবাল আর্সলান, ডা. কামরুল হাসান খান, ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, ডা.কনক কান্তি বড়ুয়া, ডা. মনিরুজ্জামান ভুঁইয়া, আবদুর রউফ সর্দার এবং মহাসচিব হিসেবে ডা. এম এ আজিজ, ডা. জামালউদ্দিন চৌধুরী, ডা. নজরুল ইসলাম, ডা. জাকারিয়া স্বপন, ডা. আবু ইউসুফ ফকির, ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, ডা. হাবিব ই মিল্লাত প্রমুখের নাম উঠে আসে। তারা সকলেই নিজেদের যোগ্য দাবি করেন।

স্বাচিপের সভাপতি পদটি নিয়ে এক কালের গুরুশিষ্য হিসেবে পরিচিত বিএমএর সাবেক মহাসচিব ও লালবাগ ৮ আসনের সাবেক সাংসদ ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও বিএমএ ও স্বাচিপের বর্তমান মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলানের অনুসারীরা দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
 
ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন প্রকাশ্যে নির্বাচনের ঘোষণা না দিলেও তার পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ও স্বাচিপের সর্বশেষ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. জুলফিকার আলী লেনিন প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করে বলেন, নির্বাচন হলে ইকবাল আর্সলান পরাজিত হবেন।

তবে জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত এক সাক্ষাৎকারে ডা. ইকবাল আর্সলান বলেছিলেন, নির্বাচন হলে তিনি যে কারো সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুুত। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলছিলেন, ‘দেয়ার ইজ নো মাদারসন্স হু কেন বায় ইকবাল আর্সলান উইথ অ্যানি অ্যামাউন্ট অব মানি, ইফ ইউ ক্যান বায় মি হান্ড্রেড টাইমস্ উইথ দেয়ার লাভ অ্যান্ড অ্যাফেকশন বাট নো মাদারসন্স এভার বর্ন ইন দিজ সয়েল হু কেন্ বায় ইকবাল আর্সলান উইথ অ্যানি অ্যামাউন্ট অব মানি।’

তার বক্তব্যে ‘দেয়ার ইজ নো মাদারসন্স’ বাক্যাটিকে অশ্লীল উল্লেখ করে তার বিরোধী পক্ষ তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। তারা চিকিৎসকদের মাঝে ইকবাল আর্সলান চিকিৎসকদের মা তুলে গালিগালাজ করেছেন বলে প্রচার করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডা. ইকবাল আর্সলানের জবাবে মাদারসন্স কোনো গালি নয়, এটি মায়ের সন্তানকে বুঝিয়েছে বলে ব্যাখ্যা দেন।

নানা তর্ক বিতর্ক শেষে নির্বাচনের ব্যাপারে একমত না হওয়ায় নেতা নির্বাচনের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়া হয়। তিনি যাকে সিলেকশন করে দেবেন তাকে সকলেই মেনে নেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কাউন্সিল অধিবেশন মুলতবি রাখা হয়। কয়েকদিন পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে সর্বশেষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক সভাপতি হিসেবে অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান ও মহাসচিব হিসেবে অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজের নাম ঘোষণা করেন।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় গঠিত নতুন কমিটিতে সহ-সভাপতি হিসেবে ঠাঁই পান অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, ডা. জামালউদ্দিন চৌধুরী, রোকেয়া সুলতানা ও অধ্যাপক ডা. আবদুর রউফ সর্দার। যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক ডা. জাকারিয়া স্বপন, অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া ও ডা. জুলফিকার লেনিন এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকির।  

এমইউ/একে/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।