জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করা হবে : মোজাম্মেল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:১৯ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫

জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করা হবে উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, জিয়াউর রহমান মুজিবনগর সরকারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করতে চাইনি। তিনি ওয়ার-কাউন্সিলর করে যুদ্ধ করতে চেয়েছিল। জিয়াউর রহমান, মুস্তাক ও তার সঙ্গীদের নিয়ে ভারতে বসে পাকিস্তানের সঙ্গে আপোষ করতে চেয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের নিরাপদে দেশ ত্যাগের ব্যবস্থা করেছিল জিয়াউর রহমান। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পাশ করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার বন্ধ করে রেখেছিল। তিনি যুদ্ধাপারাধী আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে রাষ্ট্রপতি ও শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিল। এ সব অপকর্মের জন্য জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করা হবে।

শনিবার দুপুরে কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী জনতার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে আস্ফালন করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাকিস্তানের সংসদের আলোচনা করা হয়েছে বাংলাদেশে নাকি কোনো মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। কোনো মা-বোন ধর্ষিত হয়নি। ওরা ৭১ এর পরাজয়ের গ্লানি এখনও ভুলতে পারেনি। তাদের আস্ফলনের জবাব দিতে যুদ্ধাপরাধীদের শুধু বিচারই করা হবে না তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। আর এ সম্পদ মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যবহার করা হবে। আইন না থাকলে নতুন আইন তৈরি করে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সকল সম্পত্তিই বাজেয়াপ্ত করা হবে।

মন্ত্রী জামায়াত নিষিদ্ধ করার কথা উল্লেখ করে বলেন, যুদ্ধাপরাধীর দল জামায়াতে ইসলাম। তাদের এদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। ৪৪ বছর পরও তাদের স্বভাব পরিবর্তন হয়নি। তারা জাতির কাছে ক্ষমা চাইনি ববং এখনও তারা বলে রাজনৈতিকভাবেই আমরা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করবো। অচিরেই তাদের রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হবে। তাদের বাংলার মাটিতে আর রাজনীতি করতে দেয়া হবে না।

গুপ্ত হামলাকারীদের হামলা বন্ধ করে রাজপথে আসার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কাপুরুষেরা গুপ্ত হামলা চালাচ্ছে। তারা কোনো উপায় না পেয়ে মসজিদে-মন্দিরে ককটেল আর বোমা হামলা করে এদেশকে পাকিস্তান-আফগানিস্তান বানাতে চায়। আমরা তা হতে দিতে পারি না। তাই হুশিয়ারি দিয়ে তাদের বলে দিতে চাই এবার শুধু বিষ দাঁতই ভেঙে দেয়া হবে না ধরতে পারলে মাথাও থেঁতলে দেয়া হবে।

মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন কল্যাণের কথা উল্লেখ করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তাদের ভাতা ১০ হাজার করা হয়েছে। আগামী ঈদ থেকে তাদের দুইটি করে বোনাস দেয়া হবে। আর আগামী জুন মাস থেকে মু্িক্তযোদ্ধাদের চিকিৎসা সম্পূর্ণ ফ্রি করা হবে। তাদের টাকা দিয়ে ওষুধ আর টেস্ট করা হবে না।

মন্ত্রী আরও বলেন, সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ৭০৫টি যুদ্ধ ক্ষেত্রে একই ডিজাইনে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া গণ-কবরগুলো সংরক্ষণ করা হবে।

কাশিয়ানী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলরের কমান্ডার এনায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে উপজেলার বধ্যভূমি সংলগ্ন রেলওয়ে মাঠে এ সময় অন্যান্যের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমান্ডের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদীি গামা, সহ-সংগঠনিক সম্পাদক এসএম মজিবুর রহমান, সদস্য মিয়া মুজিবুর রহমান, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এসএম মাহফুজুর হক নুরুজ্জামান, যুদ্ধকালীন কমান্ডার ক্যাপ্টেন নূর মোহাম্মদ বাবুল, গোপালগঞ্জ জেলা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর, কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোক্তার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা এসএম মহসীন আলী, খান ওয়ালিউল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মশিউর রহমান খান, খালিদ হোসেন লেবু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 হুমায়ূন কবীর/এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।