ঝাড়ফুঁক-ওঝা নয়, সাপে কাটা রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিন

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০১:৫৯ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
ফাইল ছবি

সাপে কামড়ানো রোগীকে ঝাড়ফুঁক বা ওঝার কাছে নিয়ে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসার জন্য দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) চতুর্থ আন্তর্জাতিক সর্পদংশন সচেতনতা দিবস-২০২১ উপলক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ( নন-কমিউনিকেবল ডিজিজেস বা এনসিডি) শাখা আয়োজিত এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সাপে কামড়ানোর পর দ্রুত হাসপাতালে না নিয়ে এসে অপচিকিৎসায় সময় নষ্ট করলে রোগী মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি হয়।

তিনি আরও বলেন, অনুমিত পরিসংখ্যান অনুসারে দেশে প্রতিবছর সাপের কামড়ে ৬ হাজার মানুষের মৃত্যু ও ৭ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়। মূলত বর্ষাকালে গ্রামের মানুষকেই সাপ কামড়ে থাকে বেশি। বর্তমানে জেলা ও উপজেলা পর্য়ায়ে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন ও প্রশিক্ষিত জনবল রয়েছে। তাই সাপে কাটা রোগীকে বিলম্ব না করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে। এ ব্যাপারে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সাপের বাসস্থান মানুষ দখল করে নিচ্ছে। সাপের বসবাসের জায়গা আমরা রাখছি না। ফলে সাপ মানুষের বসতিতে চলে আসছে এবং তখনই দংশনের ঘটনা ঘটছে। বর্ষাকাল, বন্যা ও বৃষ্টিপাতের সময় সাপের দংশন বৃদ্ধি পায়।

তিনি বলেন, দেশে বিভিন্ন ধরনের বিষধর সাপের মধ্যে কোবরা সাপ বেশি কামড়ায়। বর্ষা, বন্যা ও বৃষ্টিপাতের ফলে সাপের আবাসস্থল ভেসে গেলে সাপ মানুষের বাড়িতে চলে আসে। গ্রামের মানুষ যারা মাটিতে ঘুমায় তাদেরকে বেশি কামড়ায়। ঝোপঝাড়, জঙ্গল ও বাঁশঝাড়ে সাপ বেশি থাকায় এসব স্থান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল এ সভায় দিবসের গুরত্ব তুলে ধরে দেশে সাপে কামড়ানো রোগীদের চিকিৎসা, সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা, অপচিকিৎসা ও মানুষের মধ্যে অসচেতনতার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ ফয়েজ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক বলেন, সাপে কাটা রোগীদের অপচিকিৎসারোধে প্রয়োজনে কঠোর আইন প্রণয়ণ করতে হবে। সাপে কাটা রোগীদের দ্রুততম সময়ে চিকিৎসা শুরু করা অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ বিষয়। অনেক সময় ঝাড়ফুঁক ও ওঝার কাছে নিয়ে সময় নষ্ট করে যখন হাসপাতালে আনা হয় তখন অনেক বিলম্ব হয়ে যায়। রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়না।

তিনি বলেন, একটা সময় ছিল যখন সরকারি হাসপাতালে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে সাপে কাটা রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সুব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু বর্তমানে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন সরবরাহ করা হচ্ছে। এ চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত জনবল প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. সেব্রিনা ফ্লোরাসহ বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।

এমইউ/ইউএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।