কুমিল্লাবাসীকে জয় উৎসর্গ নাফিসার
বিপিএল শুরুর ঠিক আগমুহূর্তেও কী ভাবতে পেরেছিলেন নাফিসা কামাল, শিরোপা জিততে পারবেন? দল নিয়েই তো তার আক্ষেপের কমতি ছিল না। একজন ভালোমানের অলরাউন্ডার নেই। প্রতিষ্ঠিত কোন ব্যাটসম্যান নেই। মাশরাফিছাড়া প্রতিষ্ঠিত বোলারও নেই। এত ‘নেই’-এর ভিড়ে বিপিএল শুরু করতে গিয়ে না খেই হারিয়ে ফেলে তার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স- সে চিন্তাতেই দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
কিন্তু দিন শেষে বিপিএল চ্যাম্পিয়ন এখন সেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সই। কুমিল্লাসহ দলটির সমর্থকদের অকুণ্ঠ সমর্থণ, আর মাশরাফির অসাধারণ নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত বিজয়ের মালা পরিয়ে দিল নাফিসা কামালের গলাতেই। পুরো বিপিএলজুড়ে মাঠের খেলায় মাশরাফির সঙ্গে গ্যালারিতে কিংবা ডাগআউটের আশে-পাশে দেখা গেছে কুমিল্লা ফ্রাঞ্চাইজির মালিক নাফিসা কামালের সরব উপস্থিতি। গ্যালারিতে থাকা নিজের জেলা কুমিল্লার মানুষ এবং দলীয় সমর্থখদের সঙ্গে তার শুভেচ্ছা আদান-প্রদানও ছিল চোখে পড়ার মত। শেষ পর্যন্ত সবার ভালোবাস নিয়ে যখন চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট পরে নিলেন, তখন কুমিল্লার মানুষদের ভুলে যাননি নাফিসা কামাল। জয়টা তিনি তাই উৎসর্গ করেছেন কুমিল্লাবাসীর প্রতিই। সঙ্গে নিজের বাবার প্রতি কৃতজ্ঞ নাফিসা শিরোপা উৎসর্গ করলেন তাকে।
নিজের ফেসবুক পেজে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাসে কুমিল্লাবাসীকে শিরোপা উৎসর্গ করাছাড়াও অনেক কথা বলেছেন নাফিসা কামাল। নিজের বাবা বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের ক্রিকেট মাঠে আবার ফিরে আসা, মাশরাফির অসাধারণ নেতৃত্বের প্রশংসা করাসহ অনেক কথাই তিনি বলেছেন নিজের স্ট্যাটাসে। জানোনিউজ২৪.কমের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো নাফিসা কামালের দীর্ঘ সেই ফেসবুক স্ট্যটামস-
আমাদেরকে এত ভালবাসা ও সমর্থন দেওয়ার জন্য এই জয় কুমিল্লার মানুষদের প্রতি উৎসর্গ করতে চাই। দর্শকদের উৎসাহ ও সমর্থনে আমরা আরো এগিয়ে যেতে চাই। সফল দল হিসেবে গড়ে উঠার জন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি বলেছিলাম আমার যাত্রা শুরু হয়েছে কুমিল্লা থেকে, এখন আমি সবচেয়ে খুশি মানুষ কারণ
আমি সেখানে ফিরে গিয়ে কুমিল্লার হয়ে শিরোপা জিততে পেরেছি।
দ্বিতীয়ত আমি এই শিরোপা আমার বাবাকে উৎসর্গ করতে চাই, কেননা এই বিপিএল`ই আমার বাবাকে আবারও ক্রিকেট মাঠে ফিরিয়ে এনেছে। বিসিবি এবং আইসিসি থেকে সরে যাওয়ার পর আমি চেয়েছিলাম, তিনি যাতে আবারও ক্রিকেট মাঠে আসতে পারেন। এবং ক্রিকেটের প্রতি আরো অবদান রাখতে পারেন।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের যাত্রা সহজ ছিল না। ফ্র্যাঞ্চাজি পেতে আমাদেরকে লড়াই করতে হয়েছে। প্রতি ধাপে-ধাপে নিয়মিত লড়াই করে আমরা তা জয় করেছি। পরবর্তী কোচ, ম্যানেজার এবং দলের ক্রিকেটারদের অসাধারণ পারফরম্যান্সে আসরের শীর্ষ দলে পরিণত হতে সক্ষম হয়েছি। বিশেষভাবে মাশরাফি এই দলটাকে পূর্ণতা দিয়েছে। তিনি দলটাকে পরিবার করে গড়ে তুলেছে। তিনি মাঠে এবং মাঠের বাহিরে সকলকে উজ্জীবিত করে রেখেছে। খেলার আগে সে বলেছিল যে শিরোপা হাতে নিয়েই আসর করবে। তার ত্যাগ, পরিশ্রমের জন্য তাকে আমার অন্তঃস্থল থেকে কৃ্তজ্ঞতা জানাই।
আমার কাছে দলের সবাই প্রতিজ্ঞা করেছিল, যে সততার সাথে মাঠে লড়াই করে আমাদের শীর্ষে নিয়ে যাবে। আমাকে এবং আমার দলকে এত ভালবাসা ও সম্মান দেওয়ার জন্য দলের সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আইএইচএস/পিআর