উয়েফার সেরা একাদশে নেই মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ
তালিকাটা দেখলেই যে কারও চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। গত মৌসুমে কী জেতেননি লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ আর নেইমার ডি সিলভা জুনিয়র! শুধু ট্রফি জয় করা বললেও তো কম বলা হবে- তিন মহারথি মিলে গোলের বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন। করেছেন ১২১ গোল।
নতুন মৌসুমে মেসি হয়তো ইনজুরির কারণে কিছুদিন মাঠে ছিলেন না; কিন্তু নেইমার আর সুয়ারেজ তো একর পর এক গোল করে গেলেন। বার্সেলোনাকে জয় এনে দিলেন। ফিফা ব্যালন ডি’অরে সেরা তিনে নাম এসেছে মেসি-নেইমারের। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ধরলেও, টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বেও সুয়ারেজ করেছেন ৫ গোল। আর এই মৌসুমে এমএসএন মিলে করেছেন সর্বমোট ৪৬ গোল।
তবুও উয়েফার সেরা একাদশে ঠাঁই পেলেন না বার্সেলোনার তিন তারকা মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ। অথচ, তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ঠাঁই করে নিযেছেন সেরা একাদশে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের পারফরম্যান্স বিবেচনা করে এই মৌসুমের সেরা একাদশ ঘোষণা করে উয়েফা ওয়েবসাইট। সেই একাদশে নেই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনার কেউ। সর্বোচ্চ দুজন করে খেলোয়াড় আছেন জার্মান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ ও ফ্রেঞ্চ চ্যাম্পিয়ন পিএসজির (প্যারিস সেন্ট জার্মেই)। বাকি ৭জন সাতটি ভিন্ন ভিন্ন ক্লাবের।
মেসি না থাকলেও এই একাদশে অপরিহার্য হিসেবে ঠাঁই করে নিয়েছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। গ্রুপপর্বে ৬ ম্যাচে ১১ গোল করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে রেকর্ড গড়ার পর এই একাদশে থাকা তো অপরিহার্যই ছিল তার। গ্রুপপর্বে প্রথম কোনো ফুটবলার হিসেবে দুই অংকের গোলের রেকর্ড গড়েছেন তিনি।
৪-৩-৩ ফরমেশনে আক্রমণে রোনালদোর সঙ্গী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বায়ার্ন ফরোয়ার্ড টমাস মুলার (৫ গোল, দুই অ্যাসিস্ট) ও জেনিত সেন্ট পিটার্সবার্গের ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার হাল্ককে (৩ গোল, ৪ অ্যাসিস্ট)।
একাদশে মেসি-নেইমার-সুয়ারেজের সঙ্গে রবার্ট লেভানডভস্কির বাদ পড়ে যাওয়া বেশ চমক সৃষ্টি করেছে। মৌসুমে বায়ার্নের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে ৭ গোল করেছেন এই পোলিশ স্ট্রাইকার, গোলদাতার তালিকায় রোনালদোর পরেই তার অবস্থান। তবুও তার নাম নেই।
কি হিসেবে তালিকাটা তৈরী করা হলো! উয়েফা ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, একাদশ নির্বাচনে শুধু গোল কিংবা অ্যাসিস্টের সংখ্যাই নয়, পাশাপাশি বিবেচনা করা হয়েছে দলের পারফরম্যান্সে খেলোয়াড়ের প্রভাবও। এ কারণেই লেভানডভস্কিকে সরিয়ে বায়ার্ন থেকে সেরা একাদশে সুযোগ পেয়েছেন মুলার, তেমনি জেনিতকে গ্রুপ শীর্ষে ওঠানোর অবদানের জন্য জিউবার পরিবর্তে আক্রমণে সুযোগ পেয়েছেন হাল্ক।
চেলসিকে চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপ শীর্ষে ওঠানোর পুরস্কার পেয়েছেন উইলিয়ান। মিডফিল্ডে তার সঙ্গী ম্যানচেস্টার সিটির রাহিম স্টার্লিং ও জেন্টের সভেন কুমস। এবারই প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলতে আসা জেন্টকে শেষ ষোলোতে জায়গা করে দেওয়ার পুরস্কার পেলেন কুমস।
রক্ষণে পিএসজিরই দাপট বেশি। দলটির অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা ও গোলরক্ষক কেভিন ট্র্যাপ আছেন সেরা একাদশে। রক্ষণে অন্য তিনজন হলেন- বায়ার্নের লেফটব্যাক ডেভিড আলাবা, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের দিয়েগো গোডিন ও জুভেন্টাস রাইট ব্যাক আন্দ্রেয়া বারজাগলি।
চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপপর্বের সেরা একাদশ:
গোলরক্ষক: কেভিন ট্র্যাপ (পিএসজি)
ডিফেন্ডার: থিয়াগো সিলভা (পিএসজি), দিয়েগো গোডিন (অ্যাটলেটিকো), ডেভিড আলবা (বায়ার্ন) ও আন্দ্রেয়া বারজাগলি (জুভেন্টাস)
মিডফিল্ডার: সভেন কুমস (গেন্ট), উইলিয়ান (চেলসি) ও রাহিম স্টারলিং (ম্যানচেস্টার সিটি)
ফরোয়ার্ড: টমাস মুলার (বায়ার্ন), হাল্ক (জেনিত) ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো (রিয়াল)।
আইএইচএস/পিআর