হিন্দু আইন সংশোধনের দাবি সংস্কার পরিষদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৪২ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

‘বাংলাদেশে প্রচলিত হিন্দু আইন কোনো ধর্মীয় আইন নয়। ইংরেজদের বানানো পরিত্যক্ত প্রথাভিত্তিক আইন’ বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের নেতারা। একইসঙ্গে শিশু, প্রতিবন্ধী এবং তৃতীয়লিঙ্গের প্রতি বৈষম্যমূলক প্রথানির্ভর হিন্দু আইনের সংশোধন চেয়েছেন তারা।

শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সংস্কৃত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের সভাপতি ড. ময়না তালুকদার।

তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান হিন্দু আইন সনাতন ধর্মের এবং বৌদ্ধ ধর্মের মূল চেতনা থেকে বিচ্যূত ও বিকৃত। নারী অধিকার হরণ ও দুর্বল এবং আশ্রিত করে রাখা, লিঙ্গ বিবেচনায় মানুষের প্রতি বৈষম্য করা সনাতন ও বৌদ্ধ উভয় ধর্মমতের বিরোধী।’

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রকম প্রথাভিত্তিক হিন্দু আইন চালু আছে উল্লেখ করে ড. ময়না তালুকদার বলেন, ‘ভারত, নেপাল ও মরিশাসের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রথাভিত্তিক হিন্দু আইন চালু থাকলেও তা সংশোধন করে সবার সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ধর্মের কোনো আবশ্যিক শর্ত থাকলে হিন্দুপ্রধান দেশগুলোতে আইন সংশোধন করতো না।’

press-conf-2.jpg

ধর্মের মূলচেতনা, মানুষ হিসেবে ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর প্রতি বৈষম্য ও বঞ্চনার কারণে ধর্মান্তরিত হওয়াসহ হিন্দু আইন সংস্কারের নয়টি সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করেন তিনি।

লিখিত বক্তৃতাকালে সংগঠনের সভাপতি সংবাদ সম্মেলন থেকে পাঁচটি দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো- হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ, সন্তানের ওপর বাবা-মায়ের সমান অভিভাবকত্ব ও অধিকার প্রদান, হিন্দু দত্তক আইন সংস্কার, বিবাহ বিচ্ছেদের বিধান পরিবর্তন, বিবাহ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা।

পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পুলক ঘটক বলেন, ‘কিছু মানুষ হয়তো এসবের সংস্কার না চেয়ে সবাইকে বিভ্রান্ত করছে। কিন্তু ন্যায্য কথা একজনও যদি বলেন, সবাই তাকে সমর্থন করা উচিত। বাস্তবতার সঙ্গে যেসব আইনের কোনো মিল নেই, তা সংশোধনে সবাই এক হওয়া ও সমর্থন দেয়া উচিত।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের সহ-সভাপতি রিনা রায়, সুভাষ সাহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ও যুগ্ম সম্পাদক ড. নীরু বড়ুয়া, রত্না দাস, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সংগঠনের নির্বাহী সদস্য রাকেশ আচার্য, নির্বাহী সদস্য বাবলা সেন গুপ্ত, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রাণেশ রায় প্রমুখ।

এএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।