প্রণব মুখার্জি ছিলেন বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৪ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২১

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু হিসেবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের প্রতি তার সমর্থন ও ভালোবাসার জন্য আমরা তাকে স্মরণ করবো।

প্রথম মুখার্জি স্মারক বক্তৃতায় প্রচারিত এক ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, প্রণব দাদা ছাড়া এক বছর অতিবাহিত করা কঠিন ছিল। তিনি বাংলাদেশের একজন সত্যিকারের বন্ধু ও উপমহাদেশের একজন মহান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আমি মৃত্যুবার্ষিকীতে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

প্রণব মুখার্জির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে প্রণব মুখার্জি লিগ্যাসি ফাউন্ডেশন (পিএমএলএফ) এ বক্তৃতার আয়োজন করে। ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি এম ভেঙ্কাইয়া নাইডুও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ও ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংও এই উপলক্ষে ভিডিওবার্তা দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শ্রী প্রণব মুখার্জির মৃত্যু উপমহাদেশে বুদ্ধিভিত্তিক তথা রাজনৈতিক অঙ্গনে শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। তিনি (মুখার্জি) আমাদের এ অঞ্চলের আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন।’

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে বক্তব্য দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানোর জন্য তিনি ‘প্রণব মুখার্জি লিগ্যাসি ফাউন্ডেশন’ বিশেষ করে শর্মিষ্ঠা মুখার্জিকে ধন্যবাদ জানান। ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, প্রণব দাদার বাংলাদেশের প্রতি গভীর ভালোবাসা ছিল। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে তার অবদান কখনই ভোলা যাবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন তরুণ সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি আমাদের সমর্থনের জন্য সাহসী উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং বাংলাদেশের স্বীকৃতির জন্য ১৯৭১ সালের জুন মাসে রাজ্যসভায় একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। বাংলাদেশের জনগণ কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তার সমর্থনের কথা স্মরণ করছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ছিল প্রণব মুখার্জির গভীর সম্মান ও শ্রদ্ধা।

তার অবদানের জন্য ভারত সরকার তাকে ভারতরত্ন প্রদান করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে অমূল্য অবদানের জন্য ২০১৩ সালে তাকে আমাদের পক্ষ থেকে মর্যাদাপূর্ণ সম্মান ‘মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ দেওয়া ছিল সম্মানের বিষয়। তিনি একটি বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ছিলেন ও তার অসাধারণ প্রজ্ঞা এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য সুপরিচিত ছিলেন। তার বহুমুখী প্রতিভা দিয়ে তিনি দক্ষতার সঙ্গে ভারত সরকারের অর্থ, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার অসাধারণ গুণাবলির কারণে তিনি শেষ পর্যন্ত দেশের প্রথম নাগরিক ও ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন।

স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রণব মুখার্জি ও তার স্ত্রী শুভ্রা মুখার্জির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল ও অনেক স্মৃতি রয়েছে। শুভ্রা মুখার্জি বাংলাদেশি ছিলেন। প্রণব দাদা ও শুভ্রা দিদি আমার ও আমার বোন শেখ রেহানার প্রতি গভীর অনুরাগ ছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে পরিবারের ১৮ জন ঘনিষ্ঠজন হত্যার পরে ভারতে আমাদের কঠিন দিনগুলোতে তারা অভিভাবক ও পারিবারিক বন্ধু হিসেবে পাশে ছিলেন। তার চলে যাওয়া ছিল ব্যক্তিগতভাবে আমার ও আমার পরিবারের জন্য ক্ষতি। আমি তাদের দুজনকে সবসময় স্মরণ করবো।

এআরএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।