ফ্লাইটে ওঠার আগে মেডিকেল টেস্টে ফিট ছিলেন নওশাদ
ভারতের নাগপুরের হাসপাতালের হিমঘর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুমের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ এর প্রক্রিয়া শুরু করলেও ঠিক কখন মরদেহ দেশে আসতে পারে সে ব্যাপারে কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।
এক দেশ থেকে আরেক দেশে মরদেহ ফিরিয়ে আনার জন্য কিছু দাপ্তরিক আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয়। সেগুলো শেষ হলে মরদেহ আসার সময় জানা যাবে।
আজ মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশ পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানা গেছে।
তিনি জানান, ‘নওশাদের মরদেহ দেশে আনার জন্য সকল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আনুষ্ঠানিকতা শেষ হতে কত সময় লাগবে তা বলা যাচ্ছে না। দাপ্তরিক কাজ শেষ হলে হয়তো মরদেহ কখন আনা হবে তা বলা যাবে।’
কতদিন সময় লাগবে তা জানতে চাইলে ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা কখনও ফেস করিনি। জীবনের প্রথম দেখলাম, একটা মানুষ এভাবে মারা গেছে, তার মরদেহ আসবে। এসব ক্ষেত্রে একেকজনের একেকরকম সময় লাগে। তবে এতটুকু আশ্বস্ত করতে পারি যে সরকারের একদম উচ্চমহল থেকে বিমানসহ প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে যথাশিগগিরই নওশাদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা চলছে।’
ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, ‘ফ্লাইটে ওঠার কয়েক ঘণ্টা আগে প্রত্যেক পাইলটকে বাধ্যতামূলক কিছু মেডিকেল পরীক্ষা করাতে হয়। সেসব পরীক্ষায় ক্যাপ্টেন নওশাদ ফিট ছিলেন। জানা মতে তিনি হৃদরোগ বা কোনো জটিল রোগেও আক্রান্ত ছিলেন না।’
ক্যাপ্টেন নওশাদের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘তিনি খুবই পেশাদার ও অভিজ্ঞ পাইলট ছিলেন। পাইলটের আসনে বসে আকাশে ফ্লাইটের বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থায় উনি উনার পেশাদারত্ব কাজে লাগিয়েছেন। এজন্য ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব পাইলট অ্যাসোসিয়েশন থেকে স্বীকৃতিও পেয়েছেন। বরাবরই তিনি চাকরির প্রতি নিষ্ঠাবান মানুষ ছিলেন। ফ্লাইট পরিচালনা বা কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে তিনি কখনও পিছপা হননি।’
মাঝ আকাশে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম গতকাল সোমবার (৩০ আগস্ট) ভারতের নাগপুরের স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ১২টায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
শুক্রবার সকালে ওমানের মাস্কট থেকে ১২৪ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট (বিজি-০২২) উড্ডয়ন করেছিলেন ক্যাপ্টেন নওশাদ। পথে ভারতের আকাশে তিনি অসুস্থ বোধ করেন। পরে প্লেনটিকে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করানো হয় ও গুরুতর অসুস্থ ক্যাপ্টেন নওশাদকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শনিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, নওশাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় তিনি ‘কোমায়’ চলে গেছেন, লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। রোববার তার অবস্থার আরও অবনতি হয় বলে জানানো হয়। সোমবার পারিবারিক সিদ্ধান্তে লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হয়।
এমইউ/এমএইচআর/জেআইএম