টিকা উৎপাদনে বিস্তারিত পরিকল্পনা চেয়েছে সংসদীয় কমিটি
দেশে সরকারিভাবে করোনা টিকা উৎপাদনে একটি পূর্ণ পরিকল্পনা চেয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটি আশা করছে ৬-৯ মাসের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় টিকা বোতলজাত করে সরবরাহ করা যাবে।
দেশের সব মানুষকে টিকার আওতায় আনতে কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিবেদনটি আগামী বৈঠকে জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে টিকা তৈরির কার্যক্রম বাস্তবায়নে করা হয় দুটি কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির ১১তম বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন- কমিটির সদস্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, আ.ফ.ম. রুহুল হক, মুহিবুর রহমান মানিক, মো. মনসুর রহমান, মো. আব্দুল আজিজ, সৈয়দা জাকিয়া নুর, রাহগির আলমাহি এরশাদ এবং মো. আমিরুল আলম মিলন।
বৈঠকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দেশে করোনার টিকা উৎপাদন কার্যক্রম বাস্তবায়নে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি হচ্ছে উপদেষ্টা কমিটি এবং অন্যটি কারিগরি কমিটি। এই কমিটি দেশে কার্যকর ও নিরাপদ টিকা উৎপাদনে পদক্ষেপ গ্রহণ, এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনাগুলো পর্যালোচনা করে সরকারের কাছে সুপারিশ প্রদান, টিকা উৎপাদনে দেশের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা গ্রহণ এবং উৎপাদন, সংরক্ষণ ও ব্যবহার পর্যায়ে মান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করবে।
উপদেষ্টা কমিটির সদস্যরা হচ্ছেন- স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এবং এসেনশিয়াল ড্রাগসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
এই কমিটির কার্যপরিধি হলো- কোভিড-১৯ টিকা উৎপাদন কারিগরি কমিটিকে পরামর্শ দেওয়া এবং কারিগরি কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা করে উৎপাদন কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন গ্রহণ করা।
কারিগরি কমিটির আহ্বায়ক হলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সদস্য ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য), আইইডিসিআরের পরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ডিন ড. আব্দুর রহমান এবং এসেনশিয়াল ড্রাগসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সদস্য সচিব)।
সরকারের এই দুই কমিটির পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিও একটি পৃথক কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটিকেও টিকা বোতলজাতকরণ/উৎপাদনের বিষয়ে এক মাসের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে টিকা উৎপাদনের আমরা একটি কমিটি করে দিয়েছি। এই কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেবে। এরপর সংসদীয় কমিটি এটা নিয়ে আলোচনা করবে। আমরা চাই ৬-৯ মাসের মধ্যে টিকা বোতলজাত করে সরবরাহ করতে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আপাতত ভ্যাকসিন বোতলজাত করতে চাচ্ছি। তবে, সম্ভব হলে এবং প্যাটেন্ট পেলে এখানেই আমরা ভ্যাকসিন প্রস্তুত করবো।
এসেনশিয়াল ড্রাগের গোপালগঞ্জ ইউনিটই টিকা তৈরির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদ্যমান ব্যবস্থার মধ্যেই অবকাঠামো তৈরি করে আমরা টিকা বোতলজাত করবো। সেখানে আরও ৮ একর জমি রয়েছে। সেখানেই ভ্যাকসিনের জন্য ইউনিট হবে। আমরা দেশের জন্য প্রয়োজনীয় নিউমোনিয়া, যক্ষ্মাসহ অন্যান্য যেসব ভ্যাকসিন রয়েছে সেগুলোও সেখানে উৎপাদন করবো।
এইচএস/জেডএইচ/জেআইএম