অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীরকে ফের ‘তিরস্কার’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৫০ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০২১

বাংলাদেশে বিদেশিদের বিনিয়োগ নিয়ে গণমাধ্যমে সরকারের জন্য অস্বস্তিকর বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ায় আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবীরকে লঘুদণ্ড দেয়া হয়েছে। তাকে ‘সরকারি কর্মচারী (আপিল ও শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৮’ অনুযায়ী লঘুদণ্ড ‘তিরস্কার’ করে গত ১১ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি করা হয়েছে।

এর আগেও গণমাধ্যমে সরকারের জন্য অস্বস্তিকর বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ায় মাহবুব কবীরকে লঘুদণ্ড ‘তিরস্কার’ দেয়া হয়। গত বছরের ২৯ জুলাই মাহবুব কবীরের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে জাগো নিউজে তিন মাসে দুর্নীতি দূর করতে ১০ কর্মকর্তার উইং চান অতিরিক্ত সচিব শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য তিনি এ শাস্তি পেয়েছিলেন।

মাহবুব কবীর সর্বশেষ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ছিলেন। রেল বিভাগের বিভিন্ন অনিয়ম দূর করতে নতুন নতুন উদ্যোগ নিচ্ছিলেন। গত বছরের ৬ আগস্ট তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। মাহবুব কবীর এর আগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিছু সময়ের জন্য ছিলেন কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও। এ সময় তিনি ভেজাল ও নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে আলোচিত হন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম স্বাক্ষরিত শাস্তি দেয়ার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব থাকার সময় মাহবুব কবীরের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি অনলাইনে ‘বিনিয়োগ করতে এসে হু হু করে কাঁদতে দেখেছি বিদেশিদের’ শিরোনামে একটি লেখা প্রকাশিত হয়। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও প্রকৃত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্র ছাড়া পত্রিকায় প্রকাশিত ওই লেখায় তার মনগড়া, ভিত্তিহীন ও সরকারের জন্য অস্বস্তিকর বক্তব্য প্রকাশিত হওয়া সরকারি কর্মচারী হিসেবে তার আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে। তাই রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে তার বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’র অভিযোগে বিভাগীয় মামলা হয়।

এতে আরও বলা হয়, মাহবুব কবীরের বিরুদ্ধে করা বিভাগীয় মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়। তিনি ২০ সেপ্টেম্বর লিখিত জবাব দিয়ে ব্যক্তিগত শুনানি চান। গত ২২ অক্টোবর ব্যক্তিগত শুনানি শেষে মামলার অভিযোগ, লিখিত জবাব ও ব্যক্তিগত শুনানিতে দেয়া উভয় পক্ষের বক্তব্য বিবেচনায় অভিযোগটি তদন্তের জন্য স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) কে এম তারিকুল ইসলামকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তরিকুল ইসলাম গত ১২ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে মাহবুব কবীরের বিরুদ্ধে আনা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’র অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, অভিযোগের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিক প্রশাসনিক বিষয়টি বিবেচনায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী তাকে 'তিরস্কার' নামের লঘুদণ্ড দেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়, রাষ্ট্রপতি এ শাস্তি দেয়ার বিষয়ে সম্মতিও দেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে মাহবুব কবীরকে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ এর ৪(২)(ক) বিধি অনুযায়ী ‘তিরস্কার’ নামের লঘুদণ্ড দেয়া হয়েছে।

আরএমএম/বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।