মেহেরপুরে দিন দিন তামাক চাষ বাড়ছে
দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য সফলতা আসলেও তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে কোনো নীতিমালা না থাকায় মেহেরপুরে দিন দিন তামাক চাষ বাড়ছে। খাদ্যশস্য চাষে একের পর এক লোকসান এবং তামাক কোম্পানিগুলোর লোভনীয় সুবিধা পেয়ে তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন এসব চাষিরা। ফলে জমির উর্বরা শক্তি কমে যাচ্ছে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ।
জেলায় পুরোদমে শুরু হয়েছে তামাক লাগানো। এরই মধ্যে তামাক কোম্পানিগুলোর লোভনীয় সুবিধা পেয়ে চাষিরা বীজতলা দিয়ে তামাকের চারা বড় করে তুলেছে। তামাক চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য তামাক কোম্পানিগুলোর ব্যানারে বীজতলার বেডগুলোও বিভিন্নভাবে নামকরণ করে সাজানো হয়েছে। বিনামূল্যে বীজ সরবারাহ, সার প্রদানসহ সহজ শর্তে দেওয়া হচ্ছে ঋণও। ফলে ক্ষতিকারক জেনেও কোম্পানিগুলোর দেয়া সুবিধা পেয়ে অধিক লাভের আশায় তামাক চাষের দিকে ঝুঁকেছে এ জেলার চাষিরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্র মতে মেহেরপুর জেলায় গত মৌসুমে তামাক চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৯শ` ৪৭ হেক্টর জমিতে। ফলন হয়েছিল ৮ হাজার ৪শ` ৪৯ মেট্রিকটন।
গাংনী উপজেলার ধলা গ্রামের তামাক চাষি হাফিজুল জাগো নিউজকে জানান, তামাক কোম্পানিগুলো তামাক চাষে বিনামূল্যে বীজ দিয়েছে। চাষের জন্য সার ও টাকা দেয়া হয়, চাষের পর তারা টাকা কেটে নেয়।
তামাক চাষি ইয়াকুব জাগো নিউজকে জানান, কপি, বাঁধাকপি, লাল শাক, পুঁইশাক সবজি চাষে চাষিদের ক্ষতি হয় তাই লাভের আশায় চাষিরা তামাক চাষ করেন। খরচ বাদ দিয়েও ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়।
কুলবাড়ীয়া গ্রামের তামাক চাষি আব্দুল কুদ্দুস জাগো নিউজকে জানান, আমরা চার-পাঁচ বছর ধরে তামাক চাষ করি। কয়েক বছর তামাক চাষ করে এখন জমিতে মূলু দেখা দিয়েছে, জমির শক্তি কমে গিয়েছে। তামাক চাষ ভালো হওয়ার জন্য কোম্পানিগুলো ঋণ হিসেবে ৪২শ` করে টাকা দিয়েছে, পরামর্শসহ প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এস এম মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, তামাক উৎপাদনের জন্য যেসব কার্যক্রম করা হয় সেগুলো সঠিক নয়। এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করবো। তামাক কোম্পানিগুলো এ ধরনের সুবিধা না দিলে চাষিরা এ চাষ করে না। তামাকের ক্ষতিকারক দিকগুলো তুলে ধরে চাষিদের পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি নতুন নতুন জাতের ফসল উৎপাদনে তাদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
আতিকুর রহমান টিটু/এমজেড/এমএস