চিরচেনা রূপে ঢাকা
অডিও শুনুন
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুরোধে সরকারঘোষিত টানা কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের পর আজ (১১ আগস্ট) থেকে চিরচেনা রূপে ফিরতে শুরু করেছে রাজধানী ঢাকা। যান্ত্রিক নগরীখ্যাত ঢাকাসহ সারাদেশে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এতদিন রাস্তাঘাটে যানবাহন ও মানুষের চলাচল ছিল সীমিত।
বিধিনিষেধে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া লোকজনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছে। পুলিশের অপরাধ বিভাগ ও ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন তল্লাশি করে অকারণে বাইরে বের হওয়া যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও আর্থিক জরিমানা করেন।
এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা বিনা কারণে বাইরে বের হওয়া মানুষকে আর্থিক জরিমানাসহ কারাগারে পাঠান। কিন্তু আজ থেকে লকডাউন শিথিল হওয়ায় ভোর থেকেই রাস্তাঘাটে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। কাকডাকা ভোর থেকেই ঘোরে গণপরিবহনের চাকা। শুধু গণপরিবহনই নয় আজ থেকে ছোটবড় দোকানপাট ও শপিংমল মার্কেট খুলে দেয়ার কারণে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামেন।
বুধবার সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তাঘাট ঘুরে দেখা গেছে, লকডাউন শিথিলের প্রথম দিনের সকালেই রাজধানী প্রায় চিরচেনা রূপে ফিরে এসেছে। বিভিন্ন রাস্তাঘাটে রিকশা, সাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, ভ্যান গাড়ি, কাভার্ডভ্যান, ছোট-বড় বাস, জিপগাড়ি ও মাইক্রোবাসসহ অসংখ্য যানবাহন চলাচল করছে। লকডাউনের কারণে এতদিন অধিকাংশ এলাকার রাস্তাঘাটে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের অনেকটা নির্বিকার সময় কাটলেও আজ ভোর থেকেই বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের তৎপরতা দেখা যায়। সকালের দিকে সরকারি-বেসরকারি অফিসগামীদের ভিড় থাকায় বেশ কয়েকটি রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় ট্রাফিক পুলিশকে ব্যতিব্যস্ত হয়ে যানজট সামাল দিতে দেখা যায়।
এদিকে, স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলেছেন- জীবন ও জীবিকার তাগিদে লকডাউন শিথিল করা হলেও করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু কমাতে শতভাগ মাস্ক পরিধানসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, বাইরে বের হওয়া অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক থাকলেও সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করছেন না। কেউ কেউ আবার রাস্তার মোড়ে আড্ডা দিচ্ছেন, সিগারেট টানছেন। বিশেষ করে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ মুখে মাস্ক পরিধান না করেই বসে আছেন।
রাজধানীর পলাশীতে কর্তব্যরত একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট জানান, লকডাউনকালে দায়িত্ব পালনে বলতে গেলে কোনো কষ্টই করতে হয়নি। কিন্তু আজ সকাল থেকেই যানবাহনের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা এখনো কম বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এমইউ/এমআরআর/এমকেএইচ